ঝুঁকিপূর্ণ ৮৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়

খাগড়াছড়িতে শিক্ষা ব্যাহত

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

রিপন সরকার, খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ অবস্থা -যাযাদি
খাগড়াছড়ি জেলার ৮৩ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। আসবাবপত্র, শ্রেণিকক্ষ সংকটে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান চলায় বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চললেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে হতাশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবকরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলার ৯ উপজেলার ৩৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৮৩ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ২৪টি, মাটিরাঙা উপজেলায় ১৮টি, পানছড়ি উপজেলায় ১১টি, মহালছড়ি উপজেলায় ১৫টি, রামগড় উপজেলায় ৭টি, লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলায় ৪টি, দীঘিনালা উপজেলায় ৫টি এবং মানিকছড়ি উপজেলায় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মহালছড়ি উপজেলার যুদ্ধমনি কাবারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রেহানা আক্তার তার বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ উলেস্নখ করে বলেন, জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হলেও আমার বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক আবেদন নিবেদন করেও বিদ্যালয়টির কোনো উন্নয়ন হয়নি। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার নুনছড়ি প্রকল্প গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্মরণিকা চাক্‌মা বলেন, শ্রেণিকক্ষ ও আসবাবপত্র সংকটের কারণে বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি ঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ভবনটি নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট করার পরেও ভবন নির্মাণ করা হয়নি। কবে নাগাদ হবে আমার তাও জানা নেই। মাটিরাঙা উপজেলা শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ লাল দেবনাথ বলেন, মাটিরাঙা উপজেলার ইউএনডিপি কর্তৃক পরিচালিত স্কুল, যেগুলো জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগ স্কুল জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। বেশিরভাগ স্কুলই টিনশেড ও বাঁশের বেড়ার তৈরি। ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। আতঙ্ক ও আশঙ্কা থাকলেও স্থানীয়ভাবে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে কোনো রকম চালানো হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম। তা ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ১৮ স্কুলের মেরামতের জন্য ৪০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বরাদ্ধকৃত টাকা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতে পৌঁছাতে হবে। \হজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠান। সেই চিঠির কপি একই অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এর কাছে পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত ভবনগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ- আলোচনা অব্যাহত আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।