পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কাশিয়ানীর কৃষকরা

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) সংবাদদাতা
পাটচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কৃষকরা। বর্তমানে তারা পাটের বদলে বোরো ও আমনসহ অন্যান্য লাভজন ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়ায় এ উপজেলায় দিন দিন পাটের আবাদ কমে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৭ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছর ৮ হাজার ১শ' হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। যা গত বছরের চেয়ে এবার ৩২৫ হেক্টর কম হয়েছে। প্রতি বছরই এভাবে পাটের আবাদ কমে যাচ্ছে। এ দিকে স্থানীয় পাটচাষীরা জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ থেকে শুরু করে জাগ দেয়া পর্যন্ত তাদের খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বিনিময়ে বিঘা প্রতি তারা পাট পেয়ে থাকেন ১০ থেকে ১২ মণ। বর্তমান বাজারে এক মণ পাটের মূল্য ১৭ শ' থেকে ১৮ শ' টাকা। সে হিসাবে পাট বিক্রি করে কাঙ্খিত লাভের মুখ দেখছে না কৃষকরা। এ দিকে, বর্ষা মৌসুমেও এ অঞ্চলে পানির দেখা নেই। পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক কৃষক। পাট কাটার ভরা মৌসুমে নদী-নালা, খাল-বিল ও জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার ফুকরা গ্রামের কৃষক কাওছার আলী বলেন, 'কয়েক বছর ধরে পাটের আবাদ করে লাভের মুখ দেখতে পারিনি। গত বছর সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করলেও এবার মাত্র ৩০ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করেছি সংসারের জ্বালানির প্রয়োজনে।' একই উপজেলার রাতইল গ্রামের কৃষক ফুল মিয়া বলেন, 'গত দুই বছর পাটচাষ করে পানির অভাবে পাট পঁচাতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এবারও পানির দেখা নেই। জমির পাট জমিতেই রেখে দিতে হবে। এছাড়া পাটের আঁশ ছাড়াতে শ্রমিক পাওয়া যায় না।' অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় চাষীদের নিকট থেকে পাট কিনে লাভের একটি বড় অংশ হাতিয়ে নিচ্ছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগী ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। তাই কৃষকদের দাবি, ভালো মানের পাট মণপ্রতি ২৫শ' টাকা নির্ধারণ করা হোক। এদিকে বিষয়টি স্বীকার করে কাশিয়ানী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রসময় মন্ডল বলেন, 'পাটবীজ বপন ও কাটার মৌসুমে শ্রমিক সংকট, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং বিগত বছরগুলোতে পাটের বাজারদর কম হওয়ায় কৃষকরা পাটচাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।'