পাহাড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ড্রাগন চাষ

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

রিপন সরকার, খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে ড্রাগন গাছ পরিচর্যা করছেন এক কৃষক -যাযাদি
পাহাড়ে ড্রাগন চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আম, কাঁঠাল, লিচুসহ অন্যান্য ফলজ বাগানের পাশাপাশি এখন চাষিরা ড্রাগন চাষের দিকে ঝুঁকছেন। যেখানে পানির সংকট মোকাবেলায় মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সেখানে ফলদ বাগান সৃষ্টি কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। সেই অসাধ্যকে সাধন করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪০০ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় ড্রাগন চাষ করে আশা জাগিয়েছেন এক প্রান্তিক চাষি। শুধু ড্রাগন চাষই নয়, মহালছড়ির ধুমনীঘাট এলাকায় ৪০ একর টিলা ভূমিতে প্রচলিত, অপ্রচলিত ও বিলুপ্তপ্রায় সব ধরনের ফলদ গাছ সৃষ্টি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। জানা গেছে, ২০১৬ সালে দেশি-বিদেশি ৫০০ আমের চারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ গাছের চারা রোপণের মধ্য দিয়ে শখের বসে শুরু করেন বাগান। এই শখই মাত্র তিন বছরে তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। খাগড়াছড়িতে প্রচলিত, অপ্রচলিত ও বিলুপ্তপ্রায় ফলদ বাগান সৃষ্টি করে জাতীয়পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছেন এই চাষি। জাতীয় পর্যায়ে প্রথম হয়ে পাহাড়কে নতুনভাবে পরিচিত করেছেন হ্লাশিং মং চৌধুরী। চলতি বছরের ১৮ জুন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তিনি এই স্বীকৃতি লাভ করেন। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে 'বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের' অধীনে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। শুরুতে প্রণোদনা হিসেবে পাওয়া ৫০০ ড্রাগন গাছের চারা দিয়ে শুরু করেন। শুরুতেই পানি সংকটের মুখে পড়লেও সে প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে এগিয়ে গেছেন। বছর ঘুরতেই তার বাগানে ড্রাগন গাছের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই সহস্রাধিক। বর্তমানে তার বাগানে দুই হাজার ২০০ ড্রাগন গাছে ফল ধরেছে। নিজের এই সাফল্যের জন্য খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, 'তার উৎসাহে এবং হর্টিকালচার সেন্টার থেকে পাওয়া প্রণোদনায় আমি এই পাহাড়ের চূড়ায় ড্রাগন চাষ করেছি।' খাগড়াছড়ির পাহাড়ি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সি রশিদ আহমেদ বলেন, 'পাহাড়ের এত উঁচুতে ড্রাগন চাষের নজির এটাই প্রথম। সব ধরনের প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে পাহাড়ের চূড়ায় ড্রাগন চাষের বিপস্নব ঘটিয়েছেন হ্লাশিং মং চৌধুরী। পানি সংকট আর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে ড্রাগন চাষে লাভের মুখ দেখবে কৃষক।'