এবার দেশি গরুর চাহিদা বেশি

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে কোরবানির পশুরহাট -যাযাদি
স্বদেশ ডেস্ক পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র এক দিন বাকি। শেষ মুহূর্তে ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। তবে এবার ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশি গরু চাহিদা বেশি। শুক্রবার বিভিন্ন হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : মতলব (চাঁদপুর) : শেষ মুহূর্তে জমে উঠছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট ছেংগারচর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন কোরবানির ঈদ বাজার। এবার আগের মতো ভারতীয় গরুর চাহিদা নেই। হাটে হাটে ক্রেতারা ছুটছেন ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশি গরু ও ছাগলের দিকেই। মতলব উত্তর উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুরহাট ছেংগারচর বাজার পশুর হাট, লুধুয়া আমতলা বাজারসহ এখলাছপুর, নতুন বাজার, নিশ্চিটন্তপুর বাজার, কালির বাজার, কালিপুর, সটাকী বাজার এনায়েত নগর বাজার,দশানী- মোহনপুর গজরা বাজার,সুজাতপুর বাজার হাটসহ বিভিন্ন হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার এসব কোরবানির হাটগুলোতে এবার গতবারের তুলনায় ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশি গরুর চাহিদা অনেক বেশি। হাটগুলোতে প্রকারভেদে দেশি গরু ৪৫ থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর হাসিল (খাজনা) আদায় কম হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতারা খুশি হওয়ায়ার পাশাপাশি পশু ক্রয়-বিক্রয় করার পর হাসিল পরিশোধ করার হার বেড়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বেশ খুশি। শুক্রবার ছিলো মতলব উত্তর উপজেলার সবচেয়ে বড় কোরবানীর রপশুর হাট ছেংগারচর বাজারের পশুর হাটের দিন। পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর কুরবানির হাটে দেশি গরু বেশি উঠেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গররু পাইকাররা এ হাটে দাম বেশি পাওয়ার আশায় নিয়ে এসেছেন। দেশি গরুর পাশাপাশি হাটে রয়েছে বড় বড় খামারি গরুও। ছেংগারচর বাজারে পশুর হাটে পাওয়া যাবে ছোট-বড় ও মাঝারি সাইজের গররু। শুক্রবার ঠাকুরচর গ্রামের খামারি ব্যবসায়ী সালমত উল্যাহ খান তার একটি গরু ১ লাখ ৩৫ হাজার টায় বিক্রি করেছেন। ছেংগারচর বাজারের পশুর হাটে গরু কিনতে আসা সার ডিলার লোকমান, বারিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক দেলোয়ার হোসেন, আরো অনেকে জানান, গত বছরের মতো এবারও কোরবানির গরুর দাম কিছুটা বেশি। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার হাটে দেশি গরু বেশি উঠেছে। বিক্রেতারা জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কোরবানির গরুর দাম কম। ক্রেতারা কম থাকায় গরুর দাম উঠছে না। তবে সামনের কয়েকদিন ক্রেতার সমাগম বৃদ্ধি পাবে বলে জানা যায়। ইজারাদার আরো জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার হাটে দেশি গরুর চাহিদা অনেক বেশি। বগতকাল শুক্রবার হাট থেকেই প্রায় পাঁচশ গরু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই ছোট ও মাঝারি দেশি গরু। মাদারীপুর : কোরবানিকে সামনে রেখে জমে উঠেছে মাদারীপুরের চারটি উপজেলার পশুরহাটগুলো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পশু কেনাবেচা। পশুর হাটগুলোতে ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে পশু। ভারতীয় পশুর তুলনায় দেশীয় পশুতে ক্রেতাদের বেশি ভীড় লক্ষ করা যায়। জেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেল, সকাল থেকেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে আগত ক্রেতা-বিক্রেতারা গরু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য হাটগুলো চলে আসে। পশুর হাটে দেশীয় গরুর চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। গরুর পাশাপাশি বেশ সংখ্যক ছাগলও ক্রয় - বিক্রয় হচ্ছে। স্থানীয় হাটগুলোতে ভারতীয় গরু বেশি দেখা যাচ্ছে না। অল্প সংখ্যক গরু হাটে আসলেও ক্রেতাদের তেমন আকৃষ্ট করতে পারছে না। ক্রেতারা দেশি গরুই ক্রয় করছে। হাটে দেশি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রেতারা গরুর দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন। দাম বেশি চাওয়ায় ক্রেতারা বেশ ঘোরাঘুরি করে নিজেদের পছন্দমত গরু ক্রয় করছেন। গরু ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান খাঁ জানান, এ বছর হাটে প্রচুর পরিমানে দেশিয় গরু আমদানী হয়েছে। গরু লালন-পালন করতে খরচ বেশি হওয়ায় ও গরুর দাম একটু বেশী চাওয়ায় ক্রেতারা ঘোরাফেরা করছে বেশী। একটি গরু বড় করতে যে খরচ হয়েছে তার চেয়ে কম দামেতো বিক্রি করতে পারি না। সামান্য কিছু লাভ হলেই বিক্রি করে দিব। কয়েকজন গরু ক্রেতা জানান, গরু ব্যবসায়ীরা এ বছর গরুর দাম অনেক বেশী চেয়ে বসে আছেন। বিক্রেতারা যেভাবে দাম চাচ্ছেন তাতে ভালো গরু ক্রয় করা কষ্ট হয়ে যাবে। এতে করে ক্রেতাদের বিপাকে পরতে হচ্ছে। টেকেরহাটের ইজারাদাররা জানান, এ হাটে ৫০ হাজার টাকা থেকে তিন লক্ষ টাকার দামের গরু বিক্রি হচ্ছে। তবে এ বছর ৮০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা দামের দামের গরু বেশী বিক্রি হচ্ছে। রাজৈর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সমিরন প্রিয় সাহা জানান, আমাদের মেডিকেল টিম সর্বক্ষণ হাটে কাজ করে যাচ্ছে। রোগাক্রান্ত গরু পেলেই চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অপরদিকে এই বৃহত্তম গরুর হাটকে কেন্দ্র করে কোন অপরাধী চক্র যেন অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : শেষ মুহূর্তে জমে উঠতে শুরু করেছে শাহজাদপুরের কুরবানীর পশুরহাটগুলো। ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় ছিল দেশী জাতের মাঝারি ষাঁড় গরু।বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত বাদলবাড়ী হাটে গরু কেনাবেচা হয়েছে। তবে কেনাবেচায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষো করেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। বাদলবাড়ী পশুর হাট কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মজনু জানান, শাহজাদপুর শহরের উপকন্ঠে এই বাদলবাড়ী পশুর হাটে এত বেশি গরুর আমদানী হয়েছিল যে নির্দিষ্ট জায়গা ছাপিয়ে নগরডালা রোড পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। যোগাযোগ ভাল থাকায় শহর ও শহরতলীর মানুষ নির্বিঘ্নে পশু কিনে যানবহন ছাড়াই পায়ে হেটে যেতে পেরেছে। উপজেলার যমুনা অববাহিকার বৃহত্তম জামিরতা পশুর হাটের অন্যতম ইজারাদার ও ৬নং পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মুকুল জানান, ঈদের আগে শনিবার জমে উঠবে পশুর হাট। উপজেলার প্রায় ৮টি ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র জামিরতা হাটেও রেকর্ড সংখ্যক কুরবানীর পশুর আমদানী হবে। এছাড়া ঈদুল আজহার আগের দিন রবিবার উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম শাহজাদপুরের তালগাছী পশুরহাট জমে উঠবে। রোববারের হাটে মূল্য যাই হোক কুরবানীর গরু নিয়েই বাড়ী ফিরবে ক্রেতারা। পূর্বধলা (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় কোরবানির পশুর হাট বেশ জমে উঠেছে। উপজেলার ছোট বাড় প্রতিটি পশুর হাটে বিক্রি হচ্ছে কোরবানীর পশু। পছন্দের কোরবানির পশু কিনতে বিভিন্ন পশুর হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে এ বছর ৫টি নিয়মিত পশুরহাটের পাশাপাশি ৩৪টি অস্থায়ী পশুরহাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সদর বাজারে গত বৃহস্পতিবারের হাটে সবচেয়ে বড় দুইটি ষাঁড় নিয়ে এসেছেন বিশকাকুনী গ্রামের আব্দুর রেজ্জাক ও ভিকুনীয়া গ্রামের নয়ন মিয়া। তাদের ষাঁড়ের দাম দুই লাখ টাকা দাম হাঁকালেও নয়নের ষাড়টি এক লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা দাম হয়েছে বলে জানান। বাজারে অপেক্ষাকৃত ছোট গরুর চাহিদা বেশি এবং এ সব গরুর বেচা কেনাও বেশি। পূর্বধলা সদর বাজারের ইজারাদারের পক্ষে আব্দুল মোমেন জুয়েল বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পশু সরবরাহ বেশি এবং বেচাকেনাও হচ্ছে সন্তোষজনক।