কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড়

দৌলতদিয়ায় ৬ কিলোমিটার জুড়ে যানবাহনের সারি

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় -যাযাদি
কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থল রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। শুক্রবার সকালে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের প্রতিটি লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। অন্যদিকে রাজবাড়ীর ঘাটে কর্মমুখী মানুষের ঢল নামে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর :কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুট হয়ে কর্মস্থল রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। শুক্রবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের প্রতিটি লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। যাত্রীরা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কেটে লঞ্চ ও স্পিডবোটে উঠছেন। তবে প্রতিবারের মতো এবারও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফেরিঘাট সূত্রে জানা গেছে, ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে এ নৌরুটে ১৮টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ, দেড় শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে। যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কথা মাথায় রেখে বিআইডবিস্নউটিসি, বিআইডবিস্নউটিএ, পুলিশ,র্ যাব, আনসার, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এছাড়া যাত্রীসেবা নিবিঘ্ন করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক টিমও কাজ করছে ঘাট এলাকায়। যাত্রীরা কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই তাদের গন্তব্যস্থলে যাতায়াত করছে। মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম জানান, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ শেষে দঞ্চিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যাতায়াতের জন্য কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুট ব্যবহার করেন। ঈদে যাত্রীসেবায় ১৮টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ, দেড় শতাধিক স্পিডবোট রাখা হয়েছে। এছাড়া ৩ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী): প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করে জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মব্যস্ত মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে শুক্রবার দুপুর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মমুখী মানুষের ঢল নামে। এতে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকায় দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দুপুরের পর থেকে নদীপাড়ের অপেক্ষায় আটকা পড়া বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারের সারি দীর্ঘ হতে থাকে। ব্যস্ততম এ সময় রুটে চলাচলকারী ইউটিলিটি ফেরি কুসুম-কলি যান্ত্রিক ত্রম্নটিতে বিকল হয়ে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানায় মেরামতে রয়েছে। কর্মস্থলগামী মানুষকে বয়ে আনা অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে শুক্রবার বিকাল নাগাদ দৌলতদিয়ায় ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ পৌরসভা এলাকা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারজুড়ে সৃষ্টি হয় গাড়ির দীর্ঘ যানজট। সিরিয়ালে আটকে থাকা সাধারণ বাসযাত্রীরা এ সময় চরম দুর্ভোগ পোহান। সরেজমিন দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ পদ্মা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার মহাসড়কের একপাশে যাত্রীবাহী পরিবহনের দীর্ঘ সারি। অপরদিকে দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কের এক কিলোমিটার জুড়ে নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে আছে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে যানবাহনের সারি। এদিকে ঘাট থেকে মহাসড়কের ছয় কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ পৌরসভার পদ্মার মোড় এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িগুলো বিকল্প সড়ক দিয়ে অন্তত আট কিলোমিটার ঘুরিয়ে ঘাটে পাঠাচ্ছে পুলিশ। গ্রামের সরু সড়ক দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছাতে এ সকল গাড়িকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এদিকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পারাপার হতে আসা সকল যানবাহন সরাসরি ফেরিতে উঠতে পেরেছে। কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ থাকলেও ছিল না যানবাহনের সারি। যানবাহনগুলো সড়কে অপেক্ষা ছাড়াই সরাসরি এসে ফেরিতে উঠছে। তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহন ও যাত্রীর চাপে সেই চিত্র পাল্টাতে থাকে। দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত বিআইডবিস্নউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুলস্নাহ রনি জানান, ঈদের ছুটি শেষে কর্মব্যস্ত মানুষ একযোগে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে। দুপুর পর্যন্ত যানবাহনগুলো সিরিয়ালে অপেক্ষা ছাড়াই সরাসরি ফেরিতে উঠছে। কিন্তু দুপুরের পর থেকে স্রোতের মতো বিপুল সংখ্যক যানবাহন নদী পার হতে আসায় মহাসড়কে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৯টি ফেরি চলাচল করছে। বিকল থাকা ফেরিটি দ্রম্নত সময়ের মধ্যে চলাচল শুরু করবে বলে তিনি জানান।