অযত্ন-অবহেলায় ফয়েজাবাদ বধ্যভূমি

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

হুমায়ুন কবীর, বাহুবল
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী হবিগঞ্জের বাহুবলের ফয়েজাবাদ বধ্যভূমি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। পাহাড়ঘেঁষা এ বধ্যভূমিতে প্রতিনিয়ত নানা অনৈতিক কর্মকান্ড ঘটলেও তা দেখার কেউ নেই। বধ্যভূমির বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেলেও তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি। মাঝে মাঝে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ এখানে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করলেও রক্ষণাবেক্ষণের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেউই। বধ্যভূমির সিঁড়িতে রেলিং না থাকায় পর্যটকরাও উপরে উঠতে ভয় পান। একমাত্র শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে প্রদীপ প্রজ্বলন ছাড়া আর কোনো জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানও হয় না এখানে। সরকারিভাবে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিলে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে ওঠতো এই বধ্যভূমি। শুধু ঐতিহাসিক নয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ জায়গায় দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ বেড়াতেও আসেন। এখানে দেখা মেলে বানরসহ অসংখ্য জাতের পাখির। বাহুবল উপজেলার শেষ প্রান্তে ঢাকা-সিলেট ভায়া মৌলভীবাজার সড়কের আমতলী চা-বাগানে ঐতিহাসিক এ বধ্যভূমির অবস্থান। সড়কের মিরপুর বাজার থেকে কিছু দূর এগুলেই জ্বালানি তেল শোধনাগার। শোধনাগারের প্রধান দরজার ঠিক উল্টো পাশেই এ বধ্যভূমি। আমতলী চা বাগানের ৪ নং সেকশনের একটি টিলার ওপর এটি অবস্থিত। এর চারপাশই টিলায় ঘেরা। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাহুবল উপজেলা ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য বাঙালি নারী-পুরুষকে এখানে ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি সেনারা। মুক্তিকামী অসংখ্য বীর যোদ্ধাকেও এখানে এনে হত্যার পর মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন এ জায়গাটি চরম অবহেলায় পড়ে ছিল। ২০০৬ সালে সরকার এটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে টিলায় ওঠার জন্য নির্মাণ করা হয় একটি সিঁড়ি। হত্যাকান্ডের জায়গায় নির্মাণ করা হয় বধ্যভূমি। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে এটি রক্ষণাবেক্ষণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। মাঝে মাঝে চা বাগান কর্তৃপক্ষ এখানে ঝোঁপঝাড় পরিষ্কার করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা হক বলেন, বধ্যভূমির উপরে ওঠার সিঁড়িতে রেলিং লাগানো, বিদু্যৎ সংযোগসহ বিভিন্ন সংস্কার কাজ অচিরেই করা হবে। বধ্যভূমিটিকে আকর্ষণীয় ও পর্যটনমুখী করতে কার্যকর পরিকল্পনা করে আলাদা বাজেটও রাখা হবে।