মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা

প্রকাশ | ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গাজীপুর প্রতিনিধি ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে এক কারখানা শ্রমিককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার চন্দ্রা পলস্নীবিদ্যুৎ এলাকা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পিতা-পুত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত হলেন, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ভরতপুর গ্রামের ফজলুল হক মোলস্নার ছেলে অহিরুল ইসলাম (২২)। তিনি ওই উপজেলার পূর্বচন্দ্রা এলাকায় ময়েজ উদ্দিন নিটিং লিমিটেড নামের একটি কারখানায় চাকরি করতেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা পলস্নীবিদু্যৎ এলাকার ইয়াকুব শেখ (৬০), তার ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল (২৫) ও রাজশাহীর পুঠিয়া থানার কান্দা গ্রামের শামছুল মন্ডলের ছেলে মো. শামীম (২২) নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, কারখানা শ্রমিক অহিরুল ইসলাম গত ৬ আগস্ট রাত আনুমানিক ৮টায় ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি পাবনার যাওয়ার উদ্দেশে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বাসস্ট্যান্ডে যান। কিন্তু তিনি পাবনা নিজ বাড়িতে পৌঁছাননি। এরপর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। এ সময় তার পরিবারের লোকজন তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। এরপর অপরিচিত ব্যক্তি গত ১২ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় এবং ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে আটটার দিকে একব্যক্তি অহিরুলের মুঠো ফোন থেকে নিহতের চাচাতো ভাই পাঞ্জাব আলীকে ফোন করে। পরপর দুই দিনই ওই ব্যক্তি মুঠো ফোনে জানায়, অহিরুল তার হেফাজতে আছে। তাকে নিতে হলে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। দাবিকৃত টাকা না দিলে তার চাচাতো ভাই অহিরুলকে হত্যা করে লাশ গুম করা হবে বলে হুমকি দেয়। পরে নিহতের চাচাতো ভাই পাঞ্জাব আলী গত বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াকৈর থানা পুলিশকে অবহিত করে এবং একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর পুঠিয়া থানার কান্দা এলাকা থেকে শামছুল মন্ডলের ছেলে শামীমকে গ্রেপ্তার করে। শামীম চন্দ্রা পলস্নীবিদু্যৎ এলাকায় ইয়াকুব শেখের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গ্রেপ্তারকৃত শামীম জানায়, অহিরুলকে বাড়ির মালিক ইয়াকুব শেখ, তার ছেলে মো. কালাম ও কামরুজ্জামান ওরফে কামরুলের সহযোগিতায় তার হাত-পা এবং মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে ইয়াকুব শেখের বাড়ির নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে পুলিশ ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে তলস্নাশি করে কোনো লাশের সন্ধান পায়নি, তবে সেপটিক ট্যাংকে পচা গন্ধ ছিল। পরে পুলিশ ইয়াকুব শেখ ও তার ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে কামরুলকে আটক করে। এ সময় অপর ছেলে মো. কালাম সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। পরে ইয়াকুব শেখ ও তার ছেলে কামরুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা পুলিশকে জানায়, তারা হত্যা মামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার জন্য তিনি এবং তার দুই ছেলে মিলে ফের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে লাশ তুলে তাদের বাড়ির পাশে একটি ডোবায় নিয়ে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ সেই ডোবা থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।