হিদাইরখাল বঁাধে স্বপ্নভঙ্গ দুই ইউনিয়নবাসীর

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ২৫ জুন ২০১৮, ০০:০৪

গোয়াইনঘাট (সিলেট) সংবাদদাতা
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সারী নদীর মোহনায় অবস্থিত বিতকির্ত হিদাইরখাল বঁাধ এখন মরণফঁাদে পরিণত হয়েছে আলীরগঁাও ও পূবর্ জাফলং ইউনিয়নবাসীর জন্য। এটি শুধু এ অঞ্চলে কৃষি জমি কিংবা যাতায়াত ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করছে নাÑ এটি এখন পুরো এলাকার পরিবেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দঁাড়িয়েছে। অপরিকল্পিত এ বাঁধের কারণে অত্রাঞ্চলের মানুষের কৃষি আবাদ, যাতায়াত এবং গৃহপালিত গবাদি পশু পালনে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। শনিবার পূবর্ জাফলং ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পরিদশর্নকালে জানা যায়, বছর খানেক আগে আলীরগঁাও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়াডের্ প্রমত্তা সারী নদীর উপকণ্ঠে পানি প্রবাহমান একটি শাখা নদী ভরাট করে সেখানে একটি বিতকির্ত বঁাধ নিমার্ণ করা হয়। হিদাইরখাল নামক উক্ত বঁাধই এখন অত্রাঞ্চলের বিষফেঁাড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সুদীঘর্কাল থেকে তারা ডাউকি পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার কবলে পড়তেন। পাহাড়ি ঢল নেমে এলে দুই-এক ঘণ্টা কিংবা দুই-একদিন অবস্থান করে সে পানি নেমে যেত। কিন্তু হিদাইরখাল বঁাধ তৈরির ফলে পানি প্রবাহের পথ সম্পূণর্রূপে বন্ধ হয়েছে। ৩৫ বছর আগে পানি উন্নয়ন বোডর্ কতৃর্ক নিমির্ত জাফলং-সানকীভাঙ্গা বেড়িবঁাধ-রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গতর্ সৃষ্টি হওয়ায় জনসাধারণ এবং যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সানকীভাঙ্গা দক্ষিণপাড়ায় ভেঙে যাওয়া বিশাল এলাকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বঁাশ এবং কাঠ দ্বারা রক্ষার চেষ্টা করছে। এলাকাবাসী জানান, ভারি বষর্ণ কিংবা ঢলের পানি বাড়লেই এ অঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যেই ভেঙে গেছে বহু সংখ্যক ঘরবাড়ি। ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকেই অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছেন। এ ছাড়াও হিদাইরখাল বঁাধ এখন মরণফঁাদে পরিণত হয়েছে আলীরগঁাও ইউনিয়নবাসীর। বঁাধের কারণে সৃষ্টি জলাবদ্ধতা এবং পাহাড়ি ঢলে সারী নদীর অতিরিক্ত পানি উপচে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফসলি জমিতে বালি ও পলি ভরাটের কারণে মরুভ‚মিতে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী সোহরাব আলী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছরোয়ারদী জানান, হিদাইরখাল বঁাধের কারণে রাস্তাঘাট বিলীন হওয়ায় শিক্ষাথীর্সহ জনসাধারণের যাতায়াতে চরম দুভোর্গ নেমে এসেছে। এদিকে পূবর্ জাফলং ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু জানান, প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমান শাখা নদী মাটি দিয়ে ভরাট করে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে আমার ইউনিয়নজুড়ে জলাবদ্ধতা এবং তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। কৃষি জমি, জনবসতি এবং সড়ক যোগাযোগ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যেই ভাঙনে বিলীন হয়েছে সানকীভাঙ্গা দক্ষিণপাড়ার বিশাল এলাকা। তিনি আরও জানান, গত ২১ জুন গোয়াইনঘাটের একটি সভায় সিলেটের জেলা প্রশাসককেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নিবার্হী কমর্কতার্ বিশ^জিত কুমার পাল বলেন, জনগুরুত্বপূণর্ এ বিষয়টি জানার পর সমাধানের জন্য আমি যথাযথ কতৃর্পক্ষে বিষয়টি অবহিত করেছি। আশা করছি, অচিরেই এ ব্যাপারে কাযর্কর পদক্ষেপ নেয়া হবে।