অস্তিত্ব সংকটে আমতলীর দুই শতাধিক খাল

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা
সরকারি ও বেসরকারি হিসাবে বরগুনার আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে দুইশরও বেশি খাল রয়েছে। অবৈধ দখল, দূষণ আর ভরাটের কারণে খালগুলো সঙ্কুচিত হয়ে নৌ-চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খালকেন্দ্রিক শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। উপজেলার সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ খালগুলো পুনঃখনন ও অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। উপজেলার গোছখালী ও কুকুয়া নদী এবং হলদিয়া জলেখা, কাদির খাঁ, ছলেমান, মলিস্নখবাড়ি, রামজী, চাওড়ার কালীবাড়ি, আঠারগাছিয়ার আমতলা, জিনবুনিয়ার, আমতলী সদর ইউপির মাইঠা, আড়পাঙ্গাশিয়ার গোলবুনিয়া, তালগাছিয়া, পূর্বচিলা হাসানিয়া মাদ্রাসার খালসহ প্রায় দুইশর বেশি খাল বর্তমানে মৃতপ্রায়। খাল ও নদীগুলো অবৈধভাবে দখল ও পলিমাটি পড়ে ভরাট, বেআইনিভাবে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমতলী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুই শতাধিক নদী ও খাল পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। তাছাড়া খাল ও বিলের মধ্য দিয়ে অপরিকল্পিত সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ এবং নদী-খাল দখল করে বসতি ও দোকানপাট স্থাপন করায় এগুলো সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। জানা যায়, উপজেলার রামনাবাদ ও পায়রা নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া খালগুলো ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতো। খালগুলো প্রবহমান থাকায় সহজেই বিভিন্ন নৌযান যাতায়াত করত। বছরজুড়ে খালের মাছ ধরে জেলে পরিবার জীবিকা নির্বাহ করত। আমতলী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন বিশ্বাস জানান, ২০-২৫ বছর আগে নদী ও খাল দিয়ে নৌ-চলাচল করত, কিন্তু বছরের পর বছর পলি জমে এসব নদী-খাল-বিল ভরাট হয়ে গেছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামতে নামতে এখন নদী ও খালগুলোতে চার মাসের বেশি পানি থাকে না। বেসরকারি সংস্থা এনএসএসের নির্বাহী পরিচালক শাহাবুদ্দিন পান্না বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে দেয়া বন্দোবস্তগুলো বাতিল করে খালগুলো খনন করলে প্রান্তিক কৃষক ও জেলেরা ফসল উৎপাদন ও মাছ শিকার করতে পারবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, মৃত খাল ও নদীগুলো খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে কৃষি ও জেলেদের জন্য উপযোগী করা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম সরোয়ার ফোরকান মুঠোফোনে জানান, খালগুলো খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।