জরাজীর্ণ ভবনে হাসপাতাল মর্গ

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গের পাশে এভাবেই ফেলে রাখা হয় ময়লা-আবর্জনা -যাযাদি
চাঁদপুর প্রতিনিধি হাসপাতালের পাশে মর্গ থাকার কথা থাকলেও এর উল্টোচিত্র চাঁদপুরে। শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে অবস্থিত আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গটি অবস্থিত দুই কিলোমিটার দূরে স্বর্ণখোলা রোডে। শহরের বিভিন্ন পাড়া মহলস্নার ময়লা আবর্জনা এনে ফেলা হয় মর্গের সামনে। আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব, জনবলসংকট ও নানাবিধ সমস্যায় ব্যাহত হচ্ছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রদান কার্যক্রম। চাঁদপুর শহরের স্বর্ণখোলা রোড়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ একটি ভুতুড়ে ভবনে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গটি। হাসপাতাল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মর্গটিতে ময়নাতদন্তের জন্য নেই কোনো সুব্যবস্থা। মর্গের চারপাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়, রয়েছে শুকরের খামার। মর্গের আশপাশে শুকরের বিচরণ আর দূষিত ময়লা আবর্জনায় ভরা পরিবেশেই চিকিৎসকদের করতে হচ্ছে ময়নাতদন্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ। চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অপরিকল্পিতভাবে তৈরিকৃত মর্গটিতে নেই পর্যাপ্ত লোকবল, আধুনিক যন্ত্রপাতি, লাশ সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ, ভেন্টিলেশনসহ মরদেহ ধোয়ার পরে রক্ত ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। এখানে ময়নাতদন্তের জন্য চারজন ডোমের চাহিদা থাকলেও রয়েছে মাত্র দুইজন। এদের মধ্যে একজন মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাই চার জনের কাজ একজন ডোমের মাধ্যমেই করা হচ্ছে। এমনকি ময়নাতদন্তকারী কোন চিকিৎসকও নেই চাঁদপুরে। তাই বাধ্য হয়েই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার, সার্জারি, মেডিসিনসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের হাসপাতালের ডিউটি ফেলে ময়নাতদন্তের কাজ করতে হচ্ছে। চাঁদপুর আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুজাউদৌলা রুবেল বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝে আমাদের কাজ করতে হয়। মর্গটির আশপাশের পরিবেশে যে কোনো সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। কর্তৃপক্ষকে অনেক বার বলার পরেও ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি। শুকরের খামার পেরিয়ে যাওয়া লাগে মর্গে। এছাড়া লাশ কাটার জন্য কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই, লাশ সংরক্ষণের জন্য নেই কোনো ফ্রিজিং ব্যবস্থা। ৎ তাই অনেক সময় গরমে লাশে পচন ধরে ময়নাতদন্ত কার্যক্রমে বেঘাত ঘটে। তাছাড়া এই কাজের জন্য ডাক্তারদের প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় চিকিৎসকরাও আগ্রহী হয় না ময়নাতদন্ত কাজের জন্য। এখানে কোনো পরীক্ষাগার না থাকায় রিপোর্টের জন্য লাশের দেহের বিভিন্ন সেম্পল কুমিলস্না ও চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। এতে তদন্তের রিপোর্ট পেতে ১৫ দিন থেকে মাসখানেক সময় লেগে যায়।