মাদারীপুর-কুষ্টিয়ায় দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বরিশাল, গোয়ালন্দ ও মাধবপুরে তিন লাশ উদ্ধার
স্বদেশ ডেস্ক মাদারীপুর ও কুষ্টিয়ায় দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। অন্যদিকে বরিশাল, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও হবিগঞ্জের মাধবপুরে তিন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : টেকেরহাট (মাদারীপুর) : মাদারীপুরের রাজৈরে এক কিশোর চালককে হত্যা করে অটোভ্যান ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সন্ধ্যার পর রাজৈর-কোটালীপাড়া সড়কের সেনখালী মন্ডলবাড়ীর নিকট এ ঘটনা ঘটে। নিহত চালক রাজিব শেখ (১৬) উপজেলার টেকেরহাট বন্দর সংলগ্ন হৃদয়নন্দী গ্রামের হোসেন শেখের ছেলে। পুলিশ লাশ রাত ৯টার দিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করেছে। পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার আগে উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের শংকরদীর পাড় ব্রিজের নিকট থেকে ৩/৪ জন লোক রাজিবের অটোভ্যানটি ভাড়া করে নিয়ে যায়। পরে রাজৈর-কোটালীপাড়া সড়কের সেনখালী মন্ডলবাড়ীর নিকট রাস্তার পাশে চালক রাজিবের লাশ এলাকাবাসী দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ রাত ৯টার দিকে লাশ উদ্ধার করে রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করে। ওসি মো. শাহজাহান জানান, লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছি। লাশের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বরিশাল : বরিশালের উজিরপুরে রিমা আক্তার (২৭) নামে এক গৃহবধূর মৃতু্য নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। রোববার সকালে উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে স্বজনদের দাবি, হত্যার পর ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই তার মরদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শ্বশুরবাড়ির পাশ থেকে রিমার মরদেহ উদ্ধার করা হলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই বাড়ির কাউকে। রিমার স্বামীসহ সেই বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন। মৃত গৃহবধূ রিমা আক্তার বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার জয়রামপট্টি এলাকার মৃত বাবুল মিয়ার মেয়ে। দীর্ঘ ৮ বছর আগে উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মন্নান বেপারীর ছেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সাংসারিক জীবনে মিজান ও রিমা দম্পতির আবু সাঈদ নামে ৫ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। রিমার চাচা গোলাম মাওলা জানান, রিমা দেখতে একটু কালো হওয়ায় বিয়ের সময় যৌতুক দিতে হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৮ বছরের সংসার জীবনকালে মিজান ও তার পরিবারকে বিভিন্ন সময়ে ওই কারণেই গরু ও নগদ অর্থসহ বহু কিছুই দিতে হয়েছে। সর্বশেষ মিজান ও তার পরিবার এক লাখ টাকা যৌতুক চায়। কিন্তু তা দিতে অপারগতা জানালে রিমার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন অমানসিক নির্যাতন শুরু করে। এদিকে উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল (শেবামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই মৃতু্যর আসল কারণ জানা যাবে। গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে রোববার দুপুরে রুবেল শেখ (২৫) নামের কাতার থেকে শূন্য হাতে ফিরে আসা এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর চর পাঁচুরিয়া অম্বলপুর গ্রামের আ. মজিদ শেখের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রুবেল ধার দেনা করে ৬/৭ লাখ টাকা খরচ করে কাজের সন্ধানে কাতারে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে কাজ না পেয়ে শূন্য হাতে হতাশ হয়ে দেশে ফিরে আসে। এ পরিস্থিতিতে তার স্ত্রী ও এক সন্তানকে দিয়ে তার বাবা পৃথক করে দেয়। একদিকে পাওনাদারদের চাপ অপরদিকে দেশেও কোন কাজ করতে না পেরে সে চরম হতাশার মধ্যদিয়ে দিন পার করছিল। রোববার তার শয়নকক্ষে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের অন্য সদস্যরা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। নিহত রুবেলের স্ত্রী কাকলী আক্তার জানায়, দুইদিন আগে বাবার সাথে রুবেলের ঝগড়া হয়। এরপর তাকে তার স্বামী বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রহণ করতে চাইলে তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষে অনুমতি আনার পরামর্শ দিয়েছি। তা আনতে না পারলে লাশ রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে। কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় জুয়েল হোসেন (৩৬) নামে এক রিকশাচালক যুবককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার হাউজিং এস্টেট এলাকা থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জুয়েল জেলার কুমারখালী উপজেলার জয়নাবাদ মন্ডলপাড়ার মিলন হোসেনের ছেলে। স্থানীয়রা জানায়, শহরের হাউজিং এস্টেট ডি-বস্নক চাঁদাগাড়া মাঠের পাশে জুয়েলকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। পুলিশ হত্যাকান্ডেরর সঠিক কারণ জানাতে পারেনি। তবে পূর্বশত্রম্নতা কিংবা জুয়েলের নতুন রিকশা ছিনিয়ে নিতে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। নিহতের স্ত্রী পপি খাতুন জানান, শনিবার বিকেলে তার স্বামী জুয়েল রিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর রাতে আর বাড়ি ফিরেনি। রাতভর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। পরে রোববার সকালে পুলিশ শহরের হাউজিং এলাকা থেকে পুলিশ এক যুবকের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করলে লাশটি জুয়েলের বলে শনাক্ত করা হয়। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, জুয়েলের শরীরে ছুরিকাঘাতের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। মরদেহের পাশে একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুষ্টিয়া ২৫০ বেড জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মাধবপুর (হবিগঞ্জ) : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে ছোট ভাই বড় ভাই আবুল ফজলকে ( আব্দাল মিয়া-৫০) লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের মৃত হাজী গোলাম ফজলের ছেলে। রোববার বিকেলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেন। জানা যায়, জয়পুর গ্রামের আব্দাল মিয়া তার সম্পত্তি দু'মেয়ের নামে দান করে দেন। এ নিয়ে আব্দাল মিয়ার ভাই কামাল মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দেন-দরবার চলে আসছিল। শনিবার দুপুর ২টার দিকে আব্দাল মিয়া বাড়ীতে যাওয়া মাত্রই কামাল মিয়া লাঠি দিয়ে তাকে পিঠাতে থাকে। মূর্মূষ অবস্থায় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে আসলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. ফারহানা মায়মুনা আব্দাল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। থানার ওসি তদন্ত গোলাম দস্তগীর জানান-লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।