আবরার খুনের বিচার চান রবিন-অনিকের পরিবার

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
মেহেদী হাসান রবিন অনিক সরকার
বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ আসামির মধ্যে দুইজনের বাড়ি রাজশাহীতে। এরা হলেন- মেহেদী হাসান রবিন (২২) ও অনিক সরকার (২২)। তারা দু'জনই ২০১৫ ব্যাচের ছাত্র। থাকেন শেরেবাংলা হলে। এদের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান রবিনের বাড়ি পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব কাপাসিয়ায়। তিনি স্কুল শিক্ষক মাকসুদ আলীর একমাত্র ছেলে। মেহেদী হাসান রবিন বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর ৩ নম্বর আসামি অনিক সরকারের বাড়ি মোহনপুর উপজেলার বড়ইকুড়ি গ্রামে। তিনি কাপড় ব্যবসায়ী আনোয়ার সরকারের ছেলে। অনিক সরকার বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক। আবরার হত্যাকান্ডের পর রাজশাহীতে আলোচনায় আসেন এলাকায় নিরীহ এবং শান্তি ছেলে হিসেবে পরিচিত রবিন ও অনিক। তাদের পরিবারের কে কোন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালচনায় এসেছে পরিবার দুটিতে। তবে উভয় পরিবার তাদের সন্তানদের এমন কৃতকর্মে হতাশ। সন্তানরা যদি সত্যিই দোষী হয় তবে তাদের বিচার চান পরিবারের সদস্যরা। কাটাখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, 'এলাকায় খুব নিরীহ ও শান্ত ছেলে হিসেবে পরিচিত রবিন। তিনি এলাকার ছেলেদের সঙ্গে তেমন মিশত না বা কথা বলত না। রবিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সে বিষয়টিও এলাকার কেউ জানত না।' আসাদ বলেন, 'রবিনের বাবা মাকসুদ আলী ভাবিচা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। বর্তমানে তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। মূলত শিক্ষকতার চাকরি পাওয়ার পর থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।' মাকসুদ বলেন, 'রবিন বুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছে তা বছর খানেক আগে জানতে পেরেছি। তাকে রাজনীতি না করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু শুনেনি। রবিন যদি এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তার সাজা হবে। এতে আমাদের কিছু বলার নেই জানান রবিনের বাবা। এদিকে, আবরার হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি অনিকের বাবা আনোয়ার হোসেন সরকার এলাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। রয়েছে কাপড়সহ পেট্রোল পাম্প ও সারের ডিলারের ব্যবসা। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট অনিক। নৃশংস এই হত্যাকান্ডে হতবাক অনিকের পরিবারও। এসএসসি পরীক্ষার পর থেকে অনিক ঢাকাতেই লেখাপড়া করছে। অনিক ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল তা জানে না তার পরিবারের সদস্যরা। মোহনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'অনিক যে বুয়েটের ছাত্রলীগের নেতা আমরা তা কখনই শুনিনি। গণমাধ্যমের খবর দেখে আমরা জানতে পারি অনিক ছাত্রলীগ করে।' অনিকের বাবা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, 'কারো সন্তান যেন এমন না হয়; এমনটা না করে। আমি আশা করব অনিকের মতো আর কেউ যেন ভুল পথে না যায়। আইন সবার জন্য সমান। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার ছেলে অপরাধী হলে প্রচলিত আইনে তার যে সাজা হবে আমি মেনে নেব। আমি চাই আমার ছেলের বিচার হোক।'