চুনারুঘাটে সবজির নার্সারিতে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জে চুনারুঘাটে সবজির নার্সারিতে কাজ করছেন কৃষক -যাযাদি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বালিয়াড়ী গ্রামের লোকজনের প্রধান পেশা কৃষি। যখন সনাতন কৃষিতে জীবিকানির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ছিল তখন ২০ বছর পূর্বে ওই গ্রামের কৃষকরা বিকল্প কর্মসংস্থানের আশায় শুরু করেন সবজির নার্সারি ব্যবসার। আর এতে করেই সেখানকার কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। সবজির চারা বিক্রি করে এখন অনেকেই হয়েছেন স্বাবলম্বি। এখন ওই গ্রামে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সাদা পলিথিনে ঢাকা বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুধু নার্সারি আর নার্সারি। বালিয়াড়ী গ্রামের আবদুল আলী নামে এক কৃষক ৪২ বৎসর পূর্বে বালিয়াড়ী গ্রামে শুরু করেছিলেন সবজির নার্সারি করার কাজ। কোনো প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রথম দিকে তিনি সফল হননি। তবে বারবার চেষ্টার পর এক সময় তিনি সফল হন সবজির চারা উৎপাদনে। এখন সেখানে ১০-১২ জন কৃষক গড়ে তুলেছেন সবজির নার্সারি। এলাকার চাহিদা মিটানোর পর অন্যান্য জেলা থেকেও লোকজন আসেন এখান থেকে চারা ক্রয় করতে। এখানকার চারা কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হওয়ায় বাজারে নিয়ে চারা বিক্রি করতে হয় না। কৃষকরাই সরাসরি চলে আসেন এখানে। অনেকেই আবার আগাম অর্ডার দেন নার্সারি মালিককে। আবদুল আলী ৩৬ শতক জমিতে নার্সারি গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, 'শুরুতে অনেক মাইর খাইছি। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাই। পরে আমি সফল হই। আমার নার্সারির চারা নিজের ৭ বিঘা জমিতে ব্যবহার করার পাশাপাশি বিক্রি করি। আমার পরে আরও অনেকেই নার্সারি করেছেন। এখন বালিয়াড়ী গ্রামে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে শুধু নার্সারি আর নার্সারি।' গ্রামের যুবক নবিউর রহমান পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। অতিরিক্ত আয়ের আশায় আধা বিঘা জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন নার্সারি ব্যবসা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজেদের শ্রমে গড়ে তোলা নার্সারি থেকে বছরে দেড়-দুই লাখ টাকা আয় হয় তার। বালিয়াড়ী গ্রামের বিলাল মিয়া ১২ বছর পূর্বে ১ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন নার্সারি ব্যবসা। তিনি বলেন, 'এই নার্সারি আমার জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। দিনরাত আমি এটি নিয়েই চিন্তা করি। তবে পুঁজির অভাবে নার্সারি আরও বড় করতে পারেন না। সরকারিভাবে বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করলে এবং সহজ শর্তে ঋণ পেলে তিনি আরও বড় নার্সারি করতে পারতেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।' চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন সরকার, সবজির নার্সারি লাভজনক ব্যবসা। যারা এ ধরনের নার্সারি করেছেন, আমরা তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করি। বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে পরামর্শ দেই। নতুন নতুন জাত ও আগাম সবজির চারা উৎপাদনে পরামর্শ দিয়ে থাকি। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণেও তাদের সুযোগ দেই। ভবিষ্যতেও এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।