শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত মান্তা পরিবার

প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

আইয়ুব খান, রাঙ্গাবালী
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর একটি মান্তা পরিবার -যাযাদি
চরমোন্তাজ পটুয়াখালী জেলা রাঙ্গাবালী উপজেলার একটি ইউনিয়ন। চারদিকে তেঁতুলিয়া নদী ঘেরা। চরমোন্তাজ আসলে একটি দ্বীপ। অদূরেই যার সমুদ্রের গর্জন। সেই চরমোন্তাজে 'মান্তা'দের দৈনন্দিন জীবন। নদীর তীরে নৌকা আর নৌকা। প্রতিটি নৌকায় এক একটি সংসার, এক একটি পরিবার। সেখানে জমে আছে হাসি-কান্নার জীবনের গল্প। ৮০-১০০ টি পরিবার নৌকায় জলে ভেসে ভেসে কাটিয়ে দিচ্ছে জীবন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছোট্ট একটা নৌকাই তাদের ঘরবাড়ি-সংসার। নৌকাতে জন্ম, শৈশব, কৈশোর, যৌবন, বার্ধক্য আর সেই নৌকাতেই মৃতু্য। তবে বদলায়নি তাদের শৈশব। ভাসমান এই সম্প্রদায় যুগ-যুগান্তর ধরে বংশানুক্রমে ভেসে বেড়ায় নদীতে। জীবিকার প্রদান অবলম্বন নদীতে মাছ ধরা। কানামাছি, কুতকুত আর এক্কাদোক্কায় খেলাসহ গ্রামীণ খেলায় মেতে থেকে খেলার প্রশিক্ষণ নিয়ে কাটতে থাকে শিশুদের শৈশব। বাবা-মায়ের সঙ্গে নদীতে মাছ ধরা জালটা নৌকা চালানো কাজে সহযোগিতা করা। তবে এসব শিশুর জীবনে কখনো মেলে না শিক্ষার সুযোগ। মৃতৃ্যর ঝুঁকি নিয়ে নদীতে বাবার পেশায় জড়িয়ে পড়ে এসব শিশু। রোকেয়া বেগম ওখানকার মান্তা সম্প্রদায়ের সদস্য। তিনি বলেন, পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া বন্দরের আদিবাসী ছিলাম আমরা। নদীর ভাঙনে সব হারিয়ে পূর্বপুরুষরা এ বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর তীরে ঘাঁটি বাঁধেন। এখনো এখানেই আছি। বাবা-মা মারা গেছেন অনেক আগে। স্বামী আলতাব সরদার এবং তিন সন্তান শাকিব, আখিদুল ও নাজিমকে নিয়ে আমার সংসার। মাছ ধরেই চলে সংসার। পারুজান বিবি বলেন, বড়শি দিয়ে নদীতে মাছ ধরি আর তা বিক্রি করেই চলে সংসার। চরমোন্তজ এলাকার সমাজ সেবক এ,কে,আজাদ খান সাথী বলেন, মান্তা এ দেশের নাগরিক। শিক্ষাগ্রহণের মৌলিক অধিকার তাদেরও রয়েছে। তারা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে একপর্যায়ে চলে আসতে পারে মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায়। স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভূমিকা রাখতে পারে দেশ গঠনে। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে আপনার একটু শ্রম নিরক্ষর মান্তা শিশুদের দিতে পারে অক্ষর জ্ঞান এমন আবেদন জানান তিনি।