পঞ্চগড় ও কেরানীগঞ্জে সড়কে ঝরল ৯ প্রাণ

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
দুই জেলায় শুক্রবার সড়কে ঝরল ৯ প্রাণ। পঞ্চগড়ে বাসচাপায় ইজিবাইকের চালকসহ সাতজনের মৃতু্য হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ট্রাক চাপায় বাবা-ছেলের মৃতু্য হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ে বাসচাপায় ইজিবাইকের চালকসহ সাতজনের মৃতু্য হয়েছে। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের মাগুড়মারী চৌরাস্তা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটানার পর ভজনপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারের সময় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ লোকজন তাদের ধাওয়া করে। পঞ্চগড় থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়েন তারা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দুর্ঘটনার পরই স্থানীয়রা প্রায় তিন ঘণ্টা পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন অবরোধ তুলে নিলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। দুর্ঘটনার পরই বাসের চালকসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। হাইওয়ে পুলিশ বাসটি আটক করেছে। নিহতরা হলেন, তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকার ডাকবদলী গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে লাবু (২৭) এবং তার স্ত্রী মুক্তি (১৮), পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের চেকরমারী গ্রামের জয়নাল হকের ছেলে অটোচালক রফিক (২৮), একই উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের সুরিভিটা বদিনাজোত গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে আকবর আলী (৭০) ও তার স্ত্রী নুরিমা বেগম (৫৭), সাতমেরা ইউনিয়নের রায়পাড়া গ্রামের মফিজউদ্দিনের ছেলে মাকুদ হোসেন (৪৩) এবং একই ইউনিয়নের সাতমেরা ইউনিয়নের সাহেবীজোত গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী নার্গিস (৪০)। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে কাজী এন্টারপ্রাইজের একটি যাত্রীবাহী বাস পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া যাচ্ছিল। বাসটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের আমতলা স্থানে পৌঁছলে একটি ছাগলকে বাঁচাতে গিয়ে ভজনপুর থেকে জগদলের দিকে আসা একটি ইজিবাইককে চাপা দেয়। এসময় বাসের নিচে আটকে থাকা ইজিবাইকটিকে প্রায় একশ গজ টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ৫ জন। আহত দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারাও মারা যায়। সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, দুর্ঘটনার পরই বিক্ষুব্ধ লোকজন মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। জেলা প্রশাসকসহ তিনি সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করার পর তারা আশ্বস্ত হয়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। ঘটনার পরই চালক পালিয়ে যাওয়ার কারণে তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে বাসটি আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান। কেরানীগঞ্জ : রাজধানীর কেরানীগঞ্জের রুহিতপুর এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী বাবা আসাদুল হক ইপু (৪০) ও তার শিশুসন্তান সোহান (৬) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সঙ্গে থাকা আসাদুলের স্ত্রী রেশমা আক্তার আহত হয়েছেন।শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর পথচারীরা তিনজনকেই আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বাবা আসাদুল ও তার শিশুসন্তান সোহানকে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আসাদুলের স্ত্রী রেশমা জানান, তারা সায়েদাবাদ করাতিটোলা এলাকায় থাকেন। তার স্বামী একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। শুক্রবার স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে কেরানীগঞ্জের বাগমারা এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন রেশমা। পথে রোহিতপুর কুড়াহাটি এলাকায় পৌঁছানোর পর একটি ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। তখন তিনজনই ছিটকে পড়েন। দুর্ঘটনায় আসাদুল ও শিশুসন্তান সোহান মাথায় গুরুতর আঘাত পান। পরে তিনজনকেই উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে এলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আসাদুল ও সোহানকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, বাবা ও শিশুসন্তানের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। আহত রেশমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনি ভালো আছেন। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ জুবায়ের জানান, ঘটনার পরপই ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি।