বাঁশি বাজিয়ে পর্যটক আকৃষ্ট করেন 'মদিনা ভাই'

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

মো. আব্দুল ওয়াদুদ, মৌলভীবাজার
হাসন রাজার লোকে বলে, বলেরে কিংবা শাহ আব্দুল করিমের কোন মেস্তরি নাও বানাইলো; এমন মধুর দেশীয় গান যদি বাঁশির সুরে বনের গহিনে বাজে, তবে শুনতে কার না ভালো লাগে। মৌলভীবাজারে জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়ায় বাঁশি বাজিয়ে এমন গানে গানে পর্যটক আকৃষ্ট করেন মদিনা ভাই (৬০) নামে এক বংশীবাদক। তিনি তার বাঁশিতে হাসন রাজা, শাহ আব্দুল করিম, সুবীর নন্দী, দেশাত্মবোধকসহ অনেকের গান তুলেন। উদ্যানের গহিন অরণ্যে যারা যান, তারা একটি বার হলেও তার বাঁশির সুর শুনতে ভিড় করেন। দুপুর কিংবা বিকেলে হিম বাতাসের আস্ফালন ও পাখির সুরে যখন বনের ভেতর অদ্ভুত এক লগ্ন বের হয়, ঠিক তখনই হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার মতো আরেকটি সুর এসে আগন্তুকদের আনন্দ আরো কয়েক গুন বাড়িয়ে দেয়। এমন বাঁশির সুরে সুরে আগণিত পর্যটকদের তার সঙ্গে অন্য বাদ্যযন্ত্র ছাড়াও খালি গলায় গান গাইতে দেখা যায়। ৬০ বছরের মদিনা ভাই ব্যক্তি জীবনে ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছবাজারের কাছে বাগমারা এলাকার এই বাঁশিওয়ালা লাউয়াছড়ায় মূলত বাদাম ও আচার বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের মুখে আহার জোগান। বাঁশি বাজানো তার নেশা। নিজের কোনো ভিটেমাটি নেই। সরকারি খাস জমির ওপর ছোট একটা ঘরে কোন রকম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকেন তিনি। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মদিনা ভাই জানান, বিয়ে, গায়ে হলুদ কিংবা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অনেকে তাকে বাঁশি বাজানোর জন্য আমন্ত্রণ করেন। \হএভাবেই চলে যায় তার সংসার। তিনি বলেন, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া উদ্যানে বাঁশি বাজালে কোনো পর্যটক খুশি হয়ে তাকে বকশিশ দিলে তিনি তা নেন, তবে নিজ থেকে কখনো চেয়ে টাকা নেন না। তার জীবনের একটা ইচ্ছা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের ইত্যাদি অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজানো। এটাই তার জীবনের শেষ ইচ্ছা।