টাঙ্গাইলে পেনশন ভোগীদের ভোগান্তি

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দায় অপেক্ষারত পেনশনভোগীরা -যাযাদি
টাঙ্গাইলের পেনশনভোগীরা টাকা উত্তোলন করতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে প্রায় সারাদিনই কাটিয়ে দেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দা ও গাছ তলায়। এভাবে প্রতিমাসেই পেনশনভোগী গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একদিকে বসার অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও টয়লেট না থাকায় তাদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। এতে বৃদ্ধ পেনশনভোগীরা প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়, ৬৫ থেকে ৮২ বছর বয়সি পেনশনভোগী বয়োবৃদ্ধরা এদিক-সেদিক ঘুরাফেরা করছেন। কেউ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বেঞ্চে বসে কষ্টের হাই তুলছেন। পেনশন নিতে আসা টাঙ্গাইল পৌরসভার বাজিতপুর এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী পাবলিক হেল্‌থে চাকরি করতেন। তার স্বামী অনেকদিন আগে তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রেখে মারা যান। মৃতু্যর পর থেকে আনোয়ারা বেগম তার স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। বর্তমানে তার বয়স ৮২ বছর। ইতোমধ্যে শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে। বয়সের ভারে নু্যব্জ তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। তবু জীবন ধারণের প্রয়োজনে তাকে স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার পেনশনভোগী রয়েছে। প্রায় সবাই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা এবং টয়লেট সুবিধা না থাকায় তারা সীমাহীন কষ্টের শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা জানায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কাগজপত্র ঠিক করে সোনালী ব্যাংকে যেতে হয়। সেখানেও একই চিত্র। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টাকা নিতে হয়। বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি শাহানুর ইসলাম খান জানান, পেনশনের টাকা তুলতে প্রবীণদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পুরনো পদ্ধতি বাদ দিয়ে অনলাইন পদ্ধতি চালু করলে পেনশনভোগীরা সুবিধা পাবে। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, ইতোমধ্যে নতুন পেনশন গ্রহীতাদের টাকা তাদের নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বরে দেওয়া হচ্ছে। যারা অনেক আগে পেনশনে চলে গেছেন- তাদের টাকাও নিজ নিজ ব্যাংক হিসাব নম্বরে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।