মুখ দিয়ে লিখে পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে লিতুন

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
যশোরের মণিরামপুরে মুখ দিয়ে লিখে পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থী লিতুন জিরা -যাযাদি
দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেওয়া লিতুন জিরা মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে। লিতুন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। লিতুন পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চায় না। লেখাপড়া শিখে মানুষ হয়ে আরও দশজন মানুষের মতো আত্মনির্ভরশীল হতে চায় জন্ম থেকে দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া লিতুন জিরা। মুখ দিয়ে লিখেই মেধার স্বাক্ষর রাখছে এই শিক্ষার্থী। স্থানীয়রা জানান, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন দারুণ মেধাবী। হুইল চেয়ারে করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতো। বর্তমানে হুইল চেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে গেছে। তার বাবা উপজেলার এ.আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনিই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবার বেতন না হওয়ায় নতুন হুইল চেয়ারও কিনে দিতে পারেননি লিতুনকে। বছর সাতেক আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুইল চেয়ারটি দেওয়া হয়। বর্তমানে তার একটি হুইল চেয়ার খুব দরকার। লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা নানাভাবে চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মেয়ের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে তাদের সেই চিন্তা দূর হয়েছে। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর দশজন শিশুর মতো খাওয়া-দাওয়া, গোসল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার লেখা যে কারও দৃষ্টি কাড়বে। লিতুনের সঙ্গে কথা হলে সে তার ইচ্ছার কথা জানায়। তার ইচ্ছা, পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করা। লিতুন জিরার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, তার শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো। মডেল টেস্টেও কেন্দ্রে প্রথম হয়েছে সে।