ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে ঘর পাওয়া পরিবারগুলো

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরে যমুনা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই এখন সরকারের গুচ্ছগ্রাম। প্রতিবছর নদী ভাঙনের শিকার যমুনাতীরবর্তী মানুষগুলোর কাছে সরকারের দেয়া গুচ্ছগ্রামগুলো আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সম্প্রতি ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার দুর্গম চরবরুল গুচ্ছগ্রামে ঠাঁই হয়েছে নদীভাঙা ৫০টি পরিবারের। গুচ্ছগ্রামে বিনামূল্যের ঘর পেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা। প্রায় ১২ বছর আগে পাবনার জহুরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় নুরজাহান বেগমের। ২০০৯ সালে পাবনা থেকে জামালপুর আসার পথে সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান হাত হারান তিনি। একমাত্র মেয়ে জান্নাতী তখন তার গর্ভে। দুর্ঘটনায় হাত হারানোর পর স্বামী আর খোঁজ নেয়নি, দেখতে আসেনি মেয়ের মুখও। সদ্যজাত মেয়ে জান্নাতীকে নিয়ে নুরজাহানের আশ্রয় হয় বিধবা মায়ের ঘরে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই নদী ভাঙনে হারায় সেই আশ্রয়টুকুও। এরপর থেকেই বৃদ্ধ মা হাছেন বেওয়া আর মেয়ে জান্নাতীকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এক বাড়ি থেকে অন্যবাড়ি। অবশেষে নুরজাহানের আশ্রয় হয়েছে চরবরুল গুচ্ছগ্রামে। মাথা গোঁজার ঠাঁই আর সরকারের দেয়া প্রতিবন্ধী ভাতা আর হাঁস-মুরগি পালন করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। শুধু নুরজাহানই নন, বেলগাছা ইউনিয়নে যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব ৫০টি পরিবারের আশ্রয় হয়েছে চরবরুল গুচ্ছগ্রামে। উপজেলা চেয়ারম্যান জামাল আব্দুন নাসের বাবুল বলেন, সরকার সারাদেশেই আশ্রয়হীনদের গুচ্ছগ্রামে বিনামূল্যে ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ইসলামপুরের দুর্গত চরগুলোতে গুচ্ছগ্রাম তৈরি করা হয়েছে। তবে এসব গুচ্ছগ্রামে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিানিক এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার দরকার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যমুনার দুর্গম চরে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। চরবরুল গুচ্ছগ্রামে প্রতিটি এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। মূলত নদী ভাঙনে আশ্রয়হীন ৫০টি পরিবারকে এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বন্যার সময় গুচ্ছগ্রামটি আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।