কলকাতা টেস্ট

গোলাপি বলে বড় চ্যালেঞ্জ ফিল্ডিং: কোহলি

ভারতীয় অধিনায়ক বলেন, 'আমরা আমাদের টেকনিক ধরে রাখতে কাজ করেছি। কিন্তু যেটা আমাকে বিস্মিত করেছে, সেটা হলো ফিল্ডিং সেশন।'

প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সংবাদ সম্মেলনে বিরাট কোহলি
প্রথমবার গোলাপি বলে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে ভারতের। বাংলাদেশের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে হতে যাওয়া এই ম্যাচ রোমাঞ্চ ছড়াচ্ছে স্বাগতিক খেলোয়াড়দের মনে। ভিন্ন ঘরানার এই বল নিয়ে যতটুকু অনুশীলন করেছেন, তাতে করে ফিল্ডিংকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আগের দিন সন্ধ্যায় ফ্লাডলাইটের আলোয় পূর্ণ ট্রেনিং করেছে ভারত। লম্বা সময় নেটে ব্যাট করেছেন কোহলি। গোলাপি বলে ব্যাটিং পর্ব খুব সহজ মনে হয়নি তার কাছে। তবে ফিল্ডিংয়ে অনুশীলন আরও বেশি কঠিন লেগেছে। স্স্নিপে ক্যাচ ধরতে গিয়ে হাতে ছোট্ট আঘাত পান রোহিত শর্মা। অনুশীলনের সময় সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং কোনটা মনে হয়েছে প্রশ্নে কোহলি বলেছেন, 'ব্যাটিংয়ে আমরা বেশি মনোযোগ দিয়েছিলাম। ভিন্ন রঙয়ের বলে খেলার সময় ব্যাটসম্যান হিসেবে ভুল না করার চিন্তাই করবেন আপনি। আমরা আমাদের টেকনিক ধরে রাখতে কাজ করেছি। কিন্তু যেটা আমাকে বিস্মিত করেছে, সেটা হলো ফিল্ডিং সেশন।' বিশেষ করে গোলাপি বলকে হকি বলের সঙ্গে তুলনা করছেন কোহলি, যাতে লাল বলের চেয়ে একটু বেশি বার্নিশ করা হয়েছে। ভারত অধিনায়ক বলেছেন, 'স্স্নিপে বল ধরার সময় এটা হাতে খুব জোরে আঘাত করেছে, মনে হয়েছে অনেক ভারী হকি বল কিংবা বাচ্চাদের খেলার সিনথেটিক বল। এমনটা হওয়ার কারণ বলে বাড়তি প্রলেপ দেওয়া আছে। ওজনে খুব বেশি পার্থক্য নেই, কিন্তু অনেক বেশি শক্ত। তাছাড়া কিপারের কাছে বল থ্রো করতে লাল বলের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হয়।' বলের দৃষ্টিগোচরের কারণে দিনের বেলায় উঁচু ক্যাচ নেওয়া অনেক কঠিন হবে মনে করেন ৩১ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান, 'দিনের বেলায় উঁচু ক্যাচ নেওয়া হবে খুব কঠিন। লাল কিংবা সাদা বলে আপনার ধারণা আছে যে কত দ্রম্নত বল নিচের দিকে নামছে। কিন্তু গোলাপি বল! আপনার হাতের মুঠোয় আসা পর্যন্ত বলের দিকে না তাকিয়ে থাকলে সেটা মিস হবে। ফিল্ডিং সেশন ছিল অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। এই বলে ফিল্ডিং করা কত চ্যালেঞ্জিং সেটা জানলে সবাই আশ্চর্য হবে।' গোলাপি বলে টেস্টের আগে প্রস্তুতি ঘাটতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল বাংলাদেশ। অন্তত একটা প্রস্তুতি ম্যাচের অভাব বোধ করছিলেন বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এবার ভারত অধিনায়ক কোহলিও বললেন একই কথা। টেস্ট শুরুর আগের দিন কোহলি খোলামেলাভাবেই গোলাপি বলের একটা প্রস্তুতি ম্যাচ না থাকার আক্ষেপ করেছেন তিনি, 'আমার মনে হয় এটা নির্ভর করে কখন টেস্টটা হচ্ছে। যদি প্রথমে এটা হতো (গোলাপি বলের টেস্ট) তাহলে সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ করা যেত। একটা হতো লাল বলের প্রস্তুতি ম্যাচ, আরেকটা গোলাপি বলের।' ভারতীয় অধিনায়ক কোহলি মনে করেন এটাই যথেষ্ট নয়, কলকাতা টেস্টের আগে বাড়তি সময় আর প্রস্তুতি ম্যাচের দরকার ছিল ভীষণ, 'দ্বিতীয় টেস্ট গোলাপি হওয়ায় দুই টেস্টের মাঝখানে বিরতি থাকা দরকার ছিল। সেই বিরতির মধ্যে গোলাপি বলের একটা দিবা-রাত্রির প্রস্তুতি ম্যাচ দরকার ছিল। সিরিজের আগে হলে এটা কোন মানে বহন করত না। যাই হোক না কেন একটা প্রস্তুতি ম্যাচ এই টেস্টের আগে হওয়া দরকার ছিল। আর এই টেস্টের আগে পর্যাপ্ত সময় থাকারও দরকার ছিল।' টেস্টর্ যাংকিংয়ে এক নম্বর দল ভারত। বাংলাদেশ পড়ে আছে নয় নম্বরে। কেবল র?্যাংকিংই নয়, টেস্টে নামলে দুদলের বিস্তর তফাৎ বোঝা যায় শরীরী ভাষায়, খেলার ধরনে। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি নিবেদন ও একাগ্রতার পার্থক্যও চোখে পড়ার মতো। ভারত অধিনায়ক কোহলি এর কারণ খুঁজে পেয়েছেন। টেস্টে বাড়তি স্পৃহা না দেখানোয় কেবল ক্রিকেটারদের প্রতি নয়, আরও বড় কিছুর দিকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি। বড় করে দেখছেন অর্থনৈতিক বিষয়। উপরের কয়েকটি দল শক্তিশালী হচ্ছে, নিচের দিকের দলগুলো ধুঁকছে। কোহলি অন্যদের বিষয় না ঘেঁটে নিজেদের দিয়েই দিলেন উদাহরণ, 'অন্য দল বা বোর্ড কীভাবে বিষয়টা দেখে, সামলায় আমি এই ব্যাপারে বলতে পারি না। আমাদের দিক থেকে এবং বিসিসিআইর দিক থেকে গত দুই-তিন বছরে আলোচনার ভিত্তিতে টেস্ট ক্রিকেটকে ঠিক জায়গায় নিয়ে গেছি। বোর্ডের থেকে এবং খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে যেমন প্রতিশ্রম্নতি দরকার তা দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে আমরা উঁচুতে নিয়ে গেছি।'