সাপাহারের গণকবর অযত্ন-অবহেলায়

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সাপাহার (নওগাঁ) সংবাদদাতা স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৮ বছরেও নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদরে অবস্থিত গণকবরটির খোঁজ রাখেনি কেউ। অযত্ন আর অবহেলায় গণকবরটি আজ স্মৃতির পাতা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক সেনারা সাপাহারে শক্তিশালী ক্যাম্প গড়ে বসে। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন গ্রামে স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র মানুষের বসতবাড়িতে আগুন লাগিয়ে মা বোনদের ইজ্জত হরণসহ এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সে সময় অসংখ্য স্বাধীনতাকামী মানুষকে ধরে এনে ব্রাশ ফায়ারে হত্যার পর উপজেলা সদরে জিরো পয়েন্ট এলাকায় বর্তমানে নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপেস্নক্স ভবনের সামনের রাস্তার পাশে অবস্থিত পাত কুয়ায় ফেলে দিত। সে হিসেবে ওই কূপটি একটি গণকবরে পরিণত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় বরেন্দ্র এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে সম্ভবত ১৯৮৫ কিংবা ৮৬ সালের দিকে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান রোস্তম আলী ওই কুপটিকে সংস্কারের উদ্যোগ দেন। ওই কুয়াটিকে পুনঃসংস্কার করে পানি পানের উপযোগী করা হয়। আধুনিক যুগে এসে নলকূপ স্থাপন করে মানুষ পানীয় জলের প্রয়োজন মেটায়। যার ফলে কূপটি আবারো অকেজো হয়ে পানি পানের অনুপযোগী হয়ে পড়ে এবং এক সময় তা ময়লা মাটি জমে বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধারা মনে করছেন স্বাধীনতার এত বছর পরেও কেউ ওই গণকবরটির খোঁজ নেয়নি কিংবা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দিতে স্থানটি ঘিরে রেখেও তার স্মৃতি রক্ষা করেনি। এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওমর আলী জানান, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা কিংবা কোনো সরকার ওই জায়গাটির স্মৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। তবে বর্তমান সরকার দেশের সকল গণকবর স্মৃতি রক্ষার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলে তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ওই গণকবরটির তালিকা দেন। যার প্রেক্ষিতে গণকবরটির স্মৃতি রক্ষায় ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এরপর গণপূর্ত বিভাগের লোকজন জায়গাটি পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু জায়গাটি ছোট হওয়ায় সেখানে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ সম্ভব নয় বলে তারা জানান। উপজেলাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দিতে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হোক।