শাহজাদপুরে নাব্য সংকটে নৌ চলাচল ব্যাহত

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরে যমুনার বুকে জেগে ওঠা চর -যাযাদি
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের প্রধান নদী যমুনা, হুরাসাগর, করতোয়া, বড়াল, ধলাই নদীর নাব্য হ্রাস পাওয়ায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদীগর্ভে জেগে উঠছে বিস্তীর্ণ বালুচর। এ কারণে নৌযান ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে উপজেলার প্রধান নদীগুলোতে নাব্য না থাকায় অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ জনপদের মানুষ। উপজেলা সদরের সাথে স্থল পথের পাশাপাশি জলপথের যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যেসব এলাকায় যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাস্তাঘাট নেই, সেসব এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম জলপথ। বিভিন্ন মালামাল আনা নেওয়ার পাশপাশি প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে জনসাধারণের চলাচল বর্ষা মৌসুমে ভাল হয়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে দুর্ভোগ চরমে ওঠে। করতোয়া, হুরাসাগর, বড়াল নদীর সাথে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মালামাল পরিবহণসহ যাতায়াতের জন্য রয়েছে শাখা নদী। এ ছাড়া গ্রামীণ হাট-বাজারে চাল, ডাল, পাট ও কাঁচামালসহ নিত্যব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী নৌপথে আনা-নেওয়া করা হয়। করতোয়া নদী পথে পাবনা, নাটোর, বগুড়া, টাঙ্গাইল জেলা থেকে বর্ষা মৌসুমে পণ্যবাহী বড় বড় নৌকা শাহজাদপুরে আসে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলো নাব্য হারিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়। নদীগর্ভে জেগে ওঠা চরে বিশাল বালুচর আর তলদেশে চাষাবাদ করা হয় ধানসহ নানা কৃষিপণ্য। একসময় প্রধান নদীগুলোর বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা দিয়ে ডিঙি, ইঞ্জিনচালিত নৌকা, গুনটানা নৌকা চালিয়ে যাতায়াত সহ মালামাল আনা নেওয়া করা হতো। সাম্প্রতিক সময়ে নদীগুলো তার নাব্য হারিয়ে ফেলায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে নদীগর্ভে শুরু হয় চাষাবাদ। নদীর বালু ও পলি মাটিতে ধান, সরিষা, বাদাম ছাড়াও নানা শাকসবজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। এর ফলে কৃষকদের সাময়িক লাভ হলেও যোগাযোগ ক্ষেত্রে চরম বিঘ্ন ঘটে। এক সময়ের খড়স্রোতা এই নদীগুলো কালের গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে অনেকটাই অগ্রগামী। নদীর সিংহভাগ অংশে অধিক বালু পরে উঁচু-নীচু অসংখ্য দ্বীপের সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও অস্তিত্ব বাঁচিয়ে সামান্য অংশজুড়েই পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যৎসামান্য পানি দিয়ে নৌ চলাচল সম্ভব হয় না বিধায় যোগাযোগ ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। \হনদীর নাব্য সংকটের কারণে নদীগর্ভে জেগে উঠা বালুর আস্তরণ থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি করে বালু উত্তোলন করে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে স্বার্থান্বেষী মহল। নদীর গতিপ্রকৃতির পরিবর্তনের কারণে নদীর উভয় তীরে নদী দখল করে বসতবাড়ির পাশাপাশি ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে ভূমিদসু্যরা। তাই আকৃতি হারাচ্ছে নদীগুলো। এমতাবস্থায় নদী রক্ষার দাবিতে 'নদী বাঁচাও' আন্দোলনকারীরা ড্রেজিং করে পানির স্বাভাবিক চলাচল চালু রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন।