ঠাকুরগাঁওয়ে অবহেলায় শহীদ বুদ্ধিজীবীর সমাধি

প্রকাশ | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার নাম ও ছবিসহ ডাকটিকিট বের করাসহ তার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মিলেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তার সমাধিস্থলটি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখনো অবহেলায় পড়ে আছে সেই সমাধি, কেবল ১৪ ডিসেম্বর এলেই তার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। সেই সঙ্গে শহীদ সন্তান হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি তার সন্তানরা। শহীদের কবরটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়াসহ শহীদ সন্তান হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মান চান স্বজনরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক চিঠিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে শহীদের কবরটি সংরক্ষণের নিদের্শনা দেয়া হলেও আজো তা বাস্তবায়িত হয়নি। ৭১'র ১৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী জিপগাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে পীরগঞ্জে। প্রথমেই তারা তৎকালীন পীরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. সুজাউদ্দীন আহাম্মেদের পূর্ব চৌরাস্তা ওষুধের দোকানে হানা দেয়। তাকে মারপিট করে গাড়িতে তোলে এবং দোকানে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পূর্ব চৌরাস্তা থেকে আটক করা হয় অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাকে। পরে জব্বার মহাজনসহ বেশ কয়েকজন নিরীহ লোকের উপর নির্যাতন চালিয়ে ধরে নিয়ে যায়। ওইদিন বিকালে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও পাকা সড়ক লোহাগাড়া পার্শ্ববর্তী জামালপুর ফার্ম নামক স্থানে গোলাম মোস্তফাসহ অন্যদের ব্যানয়েট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে যায়। এ থেকেই শুরু হয় গণহত্যা। জামালপুর ফার্ম থেকে গোলাম মোস্তফার দেহাবশেষ নিয়ে এসে পীরগঞ্জ শহরের রঘুনাথপুরে রেলক্রসিংয়ের পূর্বে সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ১৯৯৩ সালে অধ্যাপক গোলম মোস্তফার নামে স্মারক ডাকটিকিট বের করে। শহীদের স্ত্রী ১৯৯১ এর পীরগঞ্জ থানার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ারা মোস্তফার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে অনাড়ম্বর সম্মাননা দেয়া হয়। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত স্মৃতি ১৯৭১ এর তৃতীয় খন্ড, অক্সফোর্ড এটলাসসহ বিভিন্ন বইয়ে তাকে নিয়ে বহু প্রবন্ধ ছাপা হয়। গোলাম মোস্তফা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেও আজো কোনো সহায়তা পায়নি তার পরিবার। উপজেলা প্রশাসন থেকেও সামান্য সম্মান পর্যন্ত দেখানো হয়নি শহীদ পরিবারটিকে। শহীদের স্ত্রী আনোয়ারা মোস্তফা জানান, সমাধিস্থল সংরক্ষণসহ সন্তানদের শহীদ সন্তান হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আশা করেন তিনি।