কঁাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া

ফেরি চলাচল ব্যাহত লঞ্চে যাত্রীদের চাপ

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

শিবচর (মাদারীপুর) সংবাদদাতা
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার কঁাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌ রুটে নাব্যতা সংকটে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। ফলে লঞ্চে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। ঈদকে সামনে রেখে নৌ রুট সচল রাখতে খননকাজ চললেও সব ফেরি চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয়নি। আর তাই গত এক সপ্তাহ ধরে চরম দুভোর্গ পোহাচ্ছে দূরপাল্লার পরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রীরা। এছাড়াও পণ্যবাহী পরিবহনগুলোও এ রুট ব্যবহার করতে পারছে না। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের ভিড় দেখা দিয়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটে। বিআইডবিøউটিসি’র কঁাঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়, ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত পরিবহনের যাত্রীদের ঘাট পযর্ন্ত এসে লঞ্চে করে পার হতে হচ্ছে পদ্মা নদী। এছাড়া নিয়মিত লঞ্চে পার হওয়া যাত্রী তো রয়েছেই। যে সংখ্যক যাত্রী ফেরিতে পার হতো, তারা এখন লঞ্চে পার হচ্ছে। ফলে লঞ্চঘাটে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। এছাড়াও স্পিডবোট ঘাটেও ছিল যাত্রীদের দীঘর্ লাইন। বতর্মানে এ নৌ রুটে ৮৬টি লঞ্চ ও দুইশতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কঁাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌ রুটের লৌহজং টানির্ং পয়েন্টের চ্যানেল মুখে পলি পড়ে সৃষ্টি হয়েছে নাব্যতা সংকট। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় স্রোতের তীব্রতা। চ্যানেল মুখে ঘূণির্ স্রোতের কারণে পলি এসে জমা হতে থাকলে সৃষ্টি হয় ডুবোচর। গত ১৫ দিন ধরে চ্যানেল মুখে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হতে থাকে। একপযাের্য় বিকল্প চ্যানেল চালু করে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলাচল শুরু করে। এতে করে শিমুলিয়া থেকে কঁাঠালবাড়ী আসতে বেড়ে যায় দূরত্ব। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যেত পদ্মা পারাপারে। এর কিছুদিন পরেই চ্যানেল মুখে পানি কমে যাওয়ায় রোরো ফেরি ও দুটি ডাম্প ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে। নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় গত ১১ আগস্ট বিকেল ৫টা থেকে সব ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কতৃর্পক্ষ। ফলে পরিবহন পারাপারে অচল হয়ে পড়ে এ নৌ রুট। ১২ আগস্ট দুপুর থেকে ছোট ফেরিগুলো ধারণক্ষমতার অধের্ক যানবাহন নিয়ে ফের চলাচল শুরু করলেও ১৪ আগস্ট রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল ফের বন্ধ রাখা হয়। বুধবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে ৬টি কে-টাইপ ও ৩টি মিডিয়াম ফেরি চলাচল শুরু করেছে। এদিকে নৌ রুট সচল রাখতে ৭টি খননযন্ত্র দিয়ে খননকাজ অব্যাহত রয়েছে। ঢাকাগামী যাত্রী পুষ্প সাহা বলেন, বষার্ মৌসুমে পদ্মা উত্তাল থাকে। এ সময় নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি বন্ধ থাকলে লঞ্চে ঝঁুকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। ফেরি বন্ধ থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের ভিড় বেশি। সব মিলিয়ে যাত্রীদের দুভোর্গ এ নৌ রুটে। খুলনাগামী যাত্রী সোহেল বলেন, প্রতি বছরই নাব্যতা সংকট থাকে। দুভোর্গ পোহাতে হয় যাত্রীদের। সারা বছরই নৌ রুট খনন করেও কেন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। কঁাঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, বুধবার (১৫ আগস্ট) সকাল থেকে কে-টাইপ ও ভিআইপি ফেরিগুলো চলছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্সসহ ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। তবে নাব্যতা সংকট নিরসনের চায়না ড্রেজারসহ ৭টি ড্রেজার খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উভয় ঘাটেই পারাপারের পরিবহনের দীঘর্ লাইন রয়েছে। বিআইডবিøউটিএর কঁাঠালবাড়ী লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তার হোসেন বলেন, পদ্মায় কিছুটা ঢেউ থাকলেও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রীদের চাপ তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি। তবে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী শৃঙ্খলার সঙ্গে কঁাঠালবাড়ী থেকে লঞ্চ ছাড়া হচ্ছে।