শিক্ষকের শাসনে অপমানিত হয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রধান শিক্ষকের শাসনে অপমানিত হয়ে বিষপানের পঁাচ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন মাদারীপুরের সাথী আক্তার (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। সাথী আক্তার সদর উপজেলার চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী এবং দুধখালী ইউনিয়নের পাতিলাদি গ্রামের মৃত ইকবাল বেপারির মেয়ে বলে জানা গেছে। এ দিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ও স্কুলের সহপাঠীরা প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। সাথীর মৃত্যুর খবর শোনার পর প্রধান শিক্ষক মো. নুর হোসেন পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সাথী পেয়ারপুর এলাকায় তার নানা বাড়ি থেকে উক্ত বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। গত শনিবার টিফিন প্রিয়ডে অপর এক ছাত্রী সাথীর নামে প্রধান শিক্ষকের কাছে তাকে গালি দেয়ার অভিযোগ করে। এ সময় প্রধান শিক্ষক দুই ছাত্রীকেই ডেকে এনে শাসন করেন এবং স্কেল দিয়ে হালকা মারধর করেন। এতে সাথী নিজেকে অপমানিত বোধ করে স্থানীয় একটি দোকান থেকে ঘাস মারার ওষুধ কিনে বাড়িতে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে সেটা পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাথীর মামী মুক্তা বেগম জানান, সাথীকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাজে ভাষায় গালাগালি ও মারধর করায় লজ্জায় বিষ খেয়েছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু তাকে বঁাচাতে পারলাম না। এদিকে সাথী মারা যাওয়ার আগে চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালায় প্রধান শিক্ষক মো. নূর হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সাথী ও অপর এক ছাত্রী গালাগালি করায় আমি তাদের দুইজনকেই ডেকে এনে শাসন করে ক্লাসে পাঠিয়ে দেই। আর এ সামান্য ঘটনায় সাথী যে ওষুধ খাবে, সেটা তিনি ভাবতেই পারেননি। এ ছাড়া সাথীর চিকিৎসার সব দায়ভার তিনি (প্রধান শিক্ষক) নিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উক্ত ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে এখন কোনো অভিযোগ করা হয়নি।