সেই তামান্না নূরাকে প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে চলে গেছেন অনেকেই

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
পায়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় প্রচারের আলোয় উঠে এসেছিল যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামের তামান্না নূরা। সেই আলোয় মুখ দেখিয়ে অনেকেই প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন অদম্য মেধাবী এ মেয়েটির পাশে থাকার; লেখাপড়ায় সহযোগিতা করার। কিন্তু সময় যতো গড়িয়েছে, সরে গেছে সেই আলো। একই সঙ্গে সরে গেছেন প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া অনেকেই। আর তাই তামান্না নূরার উচ্চমাধ্যমিকের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে তার পরিবারকে। কঠিন বাস্তবতায় মেধাবী এ মেয়েটির লেখাপড়া ক্রমশই ঢেকে যাচ্ছে আঁধারে। যায়যায়দিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে 'তামান্না নূরার সংগ্রাম ও সাফল্যের কথা' প্রচার হওয়ায় অনেকেরই তার কথা মনে থাকবে। উপজেলার বাঁকড়া জেকে হাইস্কুল থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল মেয়েটি। অদম্য মেধাবী মেয়েটির দুই হাত ও একটি পা নেই। শুধু একটি পা নিয়ে জন্মগ্রহণ করা মেয়েটি পায়ে লিখেই ছিনিয়ে এনেছে এসএসসির সর্বোচ্চ সাফল্য। তার এ সাফল্যের সংবাদে অনেকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিয়ে তার কাছে ছুটে গিয়েছিল। প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিল লেখাপড়ার জন্য সহযোগিতার। কিন্তু পরে তারা আর যোগাযোগ করেননি। তামান্না এখন বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। এখানেও সে মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। কলেজের অধ্যক্ষ সামছুর রহমান জানিয়েছেন, তামান্না অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় কলেজে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। কলেজে তার দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। তামান্নার বাবা রওশন আলী একটি নন-এমপিওভুক্ত দাখিল মাদরাসার শিক্ষক। তাই টিউশনি করে সংসার চালাতে হয়। তার পক্ষে তামান্নার লেখাপড়ার খরচ বহন করাও সম্ভব হয়ে উঠছে না। তিনি জানান, 'আপনারা মেয়েটিকে ভালোবাসেন খোঁজখবর রাখেন। কিন্তু অনেকেই আর খোঁজ রাখেনি। যারা নানা প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন তারাও আর পরে ফিরে তাকাননি। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যদি খরচের একটি মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করতেন তাহলে হয়তো মেয়েটি তার মেধার বিকাশ ঘটাতে পারত।' ইউএনও সাধন কুমার বিশ্বাস জানান, উপজেলার পক্ষ থেকে দুর্যোগ সহনীয় ঘরসহ কিছু সহযোগিতা করেছে। সর্বশেষ ঝিকরগাছার একটি উন্নয়ন সংস্থা 'জেডিও' থেকে দেড় হাজার টাকার বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিভাবে আরও সহযোগিতা করা যায় তা বিবেচনায় রয়েছে।