অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত জবই বিল

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

সাপাহার (নওগাঁ) সংবাদদাতা
নওগাঁর সাপাহারে জবই বিলে আসা অতিথি পাখি -যাযাদি
নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিল এখন অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত। সুদূর রাশিয়া, সাইবেরিয়াসহ বিশ্বের শীত প্রধান দেশ থেকে কয়েকশ পাখি বিলে এসে সৌন্দর্যের বিকাশ ঘটাচ্ছে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে ওই বিলে অতিথি পাখিরা এসে ভিড় জমায়। সরেজমিন বিল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিদেশ থেকে আগত পিয়াং হাঁস, পাতি সরালি, লেঙজা হাঁস, বালি হাঁস, পাতি কূটসহ দেশি জাতের শামুকখোল, পানকৌড়ি, ছন্নি হাঁস বিল এলাকা মুখরিত করে তুলছে। অতীতে পাখিশিকারিদের দৌরাত্ম্যে বিলে অতিথি পাখি আসা কমিয়ে দিয়েছিল। তবে গত বছর এলাকার কতিপয় ব্যক্তি বিল থেকে ফাঁদ পেতে পাখি ধরে বিক্রির সময় জবই বিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের হাতেনাতে আটক করে। পরে ওই পাখিশিকারিদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল্যাণ চৌধুরীর কাছে নিলে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের শাস্তি প্রদান করেন। এরপর থেকে ইউএনওর কঠোরতা ও সংগঠনের সদস্যদের জোরালো নজরদারিতে বিল এলাকায় পাখি শিকার বন্ধ রয়েছে। যার ফলে বর্তমানে দেশ-বিদেশ থেকে হরেক রকম পাখির আগমনে পুরো বিল এলাকা এখন মুখরিত। এ ছাড়া বিলে কোনো কচুরিপানা না থাকলেও সরকারি ও বেসরকারিভাবে মৎস্যজীবীরা খরা মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে বাঁশ, কাঠ ও কচুরিপানা দিয়ে কাঠা নামের মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলে। এর ফলে খরা মৌসুমে মাছ ওই স্থানে লুকিয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে সংগঠনের প্রচেষ্টা ও মৎসজীবীদের তৈরি কচুরিপানার কাঠা থাকায় অতীতের মতো আবারও আস্তে আস্তে শীত মৌসুমে পাখিরা অবাধে বিলে আসতে শুরু করেছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, বিলের বিশাল অংশে কচুরিপানা দিয়ে মাছসহ পাখিদের বড় ধরনের অভয়াশ্রম এবং নানা প্রজাতির গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল তৈরি করলে সারাবছর পাখিদের আনাগোনায় জবই বিল আবারও ফিরে পেত তার ঐতিহ্য ও নাব্যতা। ইতোমধ্যে অনেক পাখিপ্রেমিক পাখির সৌন্দর্য দেখতে বিল এলাকায় ভিড় জমাচ্ছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বিলটিকে একটি ঐতিহ্যবাহী পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।