জামালপুরের ইসলামপুরে সরিষা ক্ষেতে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন মৌয়ালরা। উপজেলার মাঠে মাঠে এখন নয়নাভিরাম সরিষার হলুদ ফুলের অপরূপ দৃশ্য। পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে অপার সুন্দর এক হলুদ গালিচায়। সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এসব জমির পাশে পোষা মৌমাছির শতশত বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছেন মৌয়ালরা। বাক্স থেকে কয়েক হাজার মৌমাছি উড়ে গিয়ে মধু সংগ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাঠে। এ মধু আহরণ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন মৌয়ালরা।
সরেজমিন ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী, গাইবান্ধা, চরপুঁটিমারী, চরগোয়ালিনী, গোয়ালেরচর ও পলবান্ধা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেখানকার বেশির ভাগ ফসলি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটতে শুরু করেছে। আর ওই সব ফুলের মধু আহরণে নেমেছেন মৌয়ালরা। সারা দিন মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করে, আবার বিভিন্ন ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে পুরো জমির পরাগায়নেও সহায়তা করছে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রচুর মধু উৎপাদন করে যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিরাও লাভের মুখ দেখছেন।
পাথর্শী ইউনিয়নের দেলিরপাড় গ্রামে সরিষার ফুল থেকে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে গাজীপুর থেকে আসা পেশাদার মৌয়াল আজিজল হক জানান, তিনি প্রতি বছরের মতো এ বছরও পোষা মৌমাছির ১৫০টি বাক্স নিয়ে সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহে এসেছেন। তিনি এ বছর প্রতি সপ্তাহে গড়ে আট মণ মধু সংগ্রহ করছেন। একই উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর এলাকায় সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহে আসা মধুপুরের পেশাদার মৌয়াল সোহরাব হোসেন জানান, তিনি এক মাস ধরে পোষা মৌমাছির ১২০টি বাক্স নিয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করছেন। এখানে মধু সংগ্রহ করে তিনি এবং মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় স্থানীয় চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, সরিষা ক্ষেতে মৌবক্স বসালে ফলন ভালো হয়। এ বছর উপজেলায় ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এ থেকে ৫ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হতে পারে। উপজেলায় মৌয়ালরা মধু সংগ্রহে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বক্স বসিয়েছে। সরিষার ফুল থেকে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে লাভবান হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পেশাদার মৌয়ালরা।