তানোরে দাম না পেয়ে ধান চাষে অনাগ্রহ

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আসাদুজ্জামান মিঠু, তানোর (রাজশাহী)
রাজশাহীর তানোরে দিগন্তজোড়া রবিশস্যের মাঠ -যাযাদি
রাজশাহীর তানোরে টানা কয়েক মৌসুম ধরে ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষক। তাই ধান চাষ করে লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না। এমন অবস্থায় ধানের লোকসান কাটাতে নতুন ফসল আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক। তবে বরেন্দ্র অঞ্চলে রবিশস্যতেই ভরসা করছেন কৃষকরা। তাই এ অঞ্চলে বেড়েছে রবিশস্যের চাষ। চলতি বছর জেলার মাঠেই শুধু ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে রবিশস্যের চাষ বেড়েছে। এবার জেলায় এক লাখ ৬০ হাজার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের চাষ হয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে এক দশকের বেশি সময় ধরে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকহারে নিচে নেমে যাচ্ছে। এছাড়া ধান চাষ করে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে কৃষিতে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। বরেন্দ্র অঞ্চলে ধানসহ সেচ নির্ভর চাষাবাদ কমেছে। অপরদিকে কম পানি সেচে ও কম খরচে বেশি উৎপাদন হয় এমন ফসল- গম, ছোলা, আলু, মসুর, সরিষা, পেঁয়াজসহ অন্য রবিশস্যের চাষ বেড়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণের অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় কৃষি আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ এক লাখ ৮৮ হাজার হেক্টর। গত বছর রবিশস্য চাষাবাদ হয়েছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর চাষাবাদ হচ্ছে এক লাখ ৬০ হাজার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে। রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বেড়েছে কয়েক গুণ। তানোর উপজেলা পাঁচন্দর মৌজার গভীর নলকূপ অপারেটর মাসুদ রানা জানান, গত দুই বছর আগে তার গভীর নলকূপের আওতায় বোরো চাষ হয়েছিল ১৮০ বিঘা, রবিশস্য গম, সরিষা, পেঁয়াজ হয়েছিল ৬০ বিঘা। কিন্তু চলতি বছর গম, সরিষা চাষ হয়েছে ১৫০ বিঘা। তাই বোরো চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষক। গোদাগাড়ী উপজেলার চান্দালায় গ্রামের তসিকুল ইসলাস বলেন, গত দুই বছর থেকে ধান চাষ করে দাম পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বর্গাচাষি পথে বসেছে। তাই গ্রামের বেশিরভাগ কৃষক ধান চাষ ছেড়ে, নানা সবজি ও রবিশস্যে ভরসা রাখছে। তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শমসের আলী জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকহারে নিচে নেমে যাচ্ছে। পানি উত্তোলনে নানা সমস্যায় চাষিরা কম সেচের আবাদে ঝুঁকছেন। এছাড়া ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।