মিরকাদিমের ধবল গরু মিললেও দামে চড়া

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

শহীদ-ই-হাসান তুহিন মুন্সীগঞ্জ
মিরকাদিমের ঐতিহ্যবাহী ধবল গরু Ñযাযাদি
কোরবানি উপলক্ষে বেশ সুনাম রয়েছে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমের গরু। এর মধ্যে ধবল গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ বছর মিরকাদিমে ঈদের হাটে বিক্রির গরু খুব কমে গেছে। পুরো এলাকায় ৩০-৪০টি খামার আছে। ছোট খামার এতে রয়েছে ৪-৫টি গরু ও বড় খামারে ১৫-২৫টি গরু হবে। সবর্সাকুল্যে এবার ৩০০ গরু হবে। তবে এবার ভালো দাম পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন খামারীরা। কিছু গরু বিক্রি শুরু হয়েছে, দাম মোটামুটি ভালোই। বিভিন্ন দামের গরু আছে, সবির্ন¤œ ৭০ হাজার ও সবোর্চ্চ ৫ লাখ টাকা। স্থানীয় হাটে এলাকার গরু পাওয়া যায় না। অধিকাংশ ক্রেতা এলাকায় এসে গরু কিনে নিয়ে যায়। আর ঢাকার রহমতগঞ্জের হাটে বিক্রি করা হয় মিরকাদিমের গরু। সিরাজগঞ্জ পাবনার গরু ঢাকার হাটে প্রচুর। মিরকাদিমের গরু বলে অনেক বেপারী বিক্রি করলেও আসলে মিরকাদিমের গরু ঢাকাতে বতর্মানে কমই আসে। বিশেষত সৌখিন মানুষ যারা দশর্নীয় গরু কোরবানি দেন। এ সময় মিরকাদিমের উন্নতমানের গরুর জন্য তাদের আনাগোনায় এ অঞ্চলে দেখা। এখন চালের মিল থাকলেও খৈল, ভুষি, কুঁড়ার দাম খুব চড়া। তাই গরু মোটাতাজা করার হার অনেক কমে গেছে। কয়েকটি পরিবার এই পেশা ধরে রেখেছে। এ ছাড়া গৃহস্থ পরিবারগুলোর সদস্যরা অধিকাংশই বিদেশ বিভ‚ঁইয়ে চলে যাওয়ায় এবং অন্য পেশায় জড়িত হয়ে পড়ায় গরু পালন কমে এসেছে। বিশেষ পালন কৌশলের কারণে এসব গরুর গোশত যেমন সুস্বাদু হয়। টেবল্যাট খাইয়ে বা ইনজেকশন দিয়ে কৃত্রিমভাবে এখানকার গরুগুলো স্বাস্থ্যবান করা হয় না। সাধারণত খৈল, ভুষি, খুদ ইত্যাদি খাওয়ানো হয় এবং স্বাস্থ্য ভালো গরুগুলোর যতœ নেয় গরুপালনকারীরা। তাই এর দাম ও চাহিদাও বেশি। পুরনো ঢাকার রহমতগঞ্জসহ বড় বড় হঁাটে এসব গরুর দেখা মেলে। তবে গত কয়েক বছর ধরে পুরান ঢাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরা ঈদের কয়েক মাস আগেই মিরকাদিমে চলে যান গরু কিনতে। তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে গরু পছন্দ করে কিনে ফেলেন এবং গৃহস্থদেরই ঈদ পযর্ন্ত গরু পালনের দায়িত্ব ও খরচ দিয়ে আসেন। ফলে কোরবানির হাটে ওঠার আগেই অনেক গরু বিক্রি হয়ে যায়। তবে এখনো পুরান ঢাকার নামিদামি পরিবারগুলো মিরকাদিমের গরু কোরবানিকে তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য মনে করেন। মিরকাদিমের গরুর মাংস বিশেষ সাধের হওয়ায় বহু মানুষ এ মাংস নিতে আসেন শখের বসে। পুরাতন খামারি লতিফ মেম্বার জানান, গরু মোটাতাজাকরণে প্রচুর লোকসান হয়। গো-খাদ্যের দাম মানুষের খাদ্যের চেয়ে অনেক বেশি। ক্রমাগত লোকসান ও আথির্ক অসংগতির কারণে এ ব্যবসা ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। একসময় আর কাউকে পাওয়া যাবে না মিরকাদিমে গরু মোটাতাজাকরণ কাজে। তবে এবার গরুর দাম ভালোই। ৬টা গরু বিক্রি করে ৩ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। এখানে এসে কিনে নিয়ে গেছে। হাটে নেয়া হয়নি এখনও। সাধারণত ঢাকার রহমতগঞ্জ হাটে মিরকাদিমের গরু পাওয়া যায়।