কেউ খবর রাখে না পাবনার নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানুর

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মহিলা মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা (৮০) প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় পড়ে রয়েছেন। চলাফেরা করতে পারেন না। তালিকাভুক্ত এ নারী মুক্তিযোদ্ধা অর্থাভাবে সুচিকিৎসা নিতে পারছেন না। আগে দুই-একজন খোঁজ নিলেও এখন কেউ তার খবর নেয় না বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করা এই বীর সেনানী মা ৪৯ বছর পর আবার বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। সরেজমিনে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত থাকা অবস্থায় গত ছয় মাস আগে আবার স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। বর্তমানে উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেথুঁলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ভাঙা কুঁড়েঘরে মৃতু্যর প্রহর গুনছেন। স্বামী আব্দুল প্রামাণিক মারা যান কয়েক বছর আগে। তার দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন। মায়ের সরকারি ভাতা এবং নিজেদের সামান্য আয়ে কোনোমতে চলে তাদের সংসার। তাই অর্থাভাবে মায়ের সুচিকিৎসা করতে পারছেন না ছেলেরা। ভানু নেছার দুই ছেলে ইউনুস আলী ও শহিদুল ইসলাম জানান, তার মা বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। তাকে কোলে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে হয়। ইশারায়, আকার-ইঙ্গিতে কথা বলেন। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু চিকিৎসা করানোর টাকা তাদের নেই। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, ১৯৭১ সালে মক্তিযুদ্ধে সাঁথিয়ায় বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা। সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোলাবারুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে পৌঁছে দিতেন তিনি। একবার গুলিতে আহতও হয়েছিলেন। যার ফলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং নিয়মিত ভাতা পান। ১৯৯৬ সালে পাবনায় ও ঢাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে তাকে সম্মানিত করা হয়। তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু এখন জীবনের এই শেষ সময়ে এসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। এখন আর কেউ তার খবর নেয় না। সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামাল আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে দেখে এসেছেন। উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।