দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীঘর্ সারি, দুভোর্গ

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা
কোরবানির পশুবাহী অতিরিক্ত ট্রাকের চাপে দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া ঘাটে নদীপাড়ের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকা পড়েছে বিভিন্ন হাজারও যানবাহন। আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রী ও গরুবাহী ট্রাকচালক, বেপারি এবং গরুর মালিকরা মহাদুভেের্গর শিকার হচ্ছেন। শনিবার বেলা ১১টা পযর্ন্ত যানবাহনের সারি ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট পযর্ন্ত অন্তত আট কিলোমিটার বিস্তৃত ছিল। এর আগে প্রায় সারা রাত যানবাহনের এই সারি ছিল রাজবাড়ী সদর উপজেলা খানখানাপুর পযর্ন্ত ১২ কিলোমিটারজুড়ে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সিরিয়াল কিছুটা কমতে থাকে। কিন্তু গত তিন দিন ধরে বিকালের পর থেকে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে যানজট। এর কারণ হিসেবে কতৃর্পক্ষ দাবি করছে, বিকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে গরুবাহী ট্রাক একযোগে আসতে থাকায় সারা রাত মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে ভুক্তভোগী ও ঘাট সংশ্লিষ্টরা দাবি করেন, রাতে ফেরির সংখ্যা কমে যাওয়া ও দালালচক্রকে সুবিধা করে দিতেই অনেকটা পরিকল্পিতভাবে যানজটের সৃষ্টি করা হয়ে থাকে। সরেজমিন শনিবার দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ পযর্ন্ত মহাসড়কে যানবাহন নদীপারের অপেক্ষায় সারিবদ্ধ হয়ে দঁাড়িয়ে আছে। আটকে থাকা যানবাহনের মধ্যে অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কতৃর্পক্ষ কোরবানির পশুবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার অগ্রাধিকার দিয়ে পারাপার করছে কতৃর্পক্ষ। শনিবার সকাল ১০টার দিকে গোয়ালন্দ ডাকবাংলোর সামনে কথা হয় শুক্রবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া থেকে ১২টি বড় আকারের গরু ট্রাকে বোঝাই করে আসা আমির হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তাদের ট্রাকটি মহাসড়কের সিরিয়ালে আটকা পড়ে। তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর ট্রাকের গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই তারা বাধ্য হয়ে ট্রাক থেকে গরুগুলো নামিয়ে ফেলেন। তবে তাদের গরুগুলো এখন মোটামুটি ভালো আছে বলে তিনি জানান। একই স্থানে সিরিয়ালে আটকে থাকা গরুর মালিক খলিল মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, তিনি তার নিজের পোষা দুটি বড় আকারের ষাড় নিয়ে অন্য গরুর মালিকদের সঙ্গে রাজধানীর পশুর হাটে যাচ্ছেন। রোদ ওঠার আগেই ঘাট পার হতে তাদের ট্রাকটি মধ্যরাতে কুষ্টিয়া থেকে ছেড়েছে। রাত ৩টার দিকে খানখানাপুর এলাকায় মহাসড়কের সিরিয়ালে আটকা পড়ে। দীঘর্ সাত ঘণ্টায় গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ পযর্ন্ত আসতে পেরেছেন। তিনি আরও বলেন, জানিনা কখন ফেরির নাগাল পাব। তার ষাড় দুটি স্থানীয়ভাবে আট লাখ টাকা দাম হয়েছিল। কিন্তু তিনি গরু দুটি অন্তত ১২ লাখ টাকা বিক্রির আশায় ঢাকা নিয়ে যাচ্ছেন। বিআইডবিøউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটে কমর্রত ব্যবস্থাপক মো. দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা রাজধানী ঢাকাগামী অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন আটকা পড়েছে। এ ছাড়া তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারেও অনেক বেশি সময় লাগছে। বতর্মানে দৌলতদিয়ায় পঁাচটি ফেরিঘাট ও নৌরুটের ফেরিবহরে ২০টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছে। এরমধ্যে কে-টাইপ দুটি ফেরি রাতে চলাচল করতে না পারায় সন্ধ্যার পর থেকে ফেরি দুটি বন্ধ রাখা হয়।