'সুখ সাগরেই' আশা চাষিদের

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

গোলাম মোস্তফা, মেহেরপুর
মেহেরপুরে মাঠ জুড়ে সুখ সাগর পেঁয়াজ চাষ করছেন কৃষকরা -যাযাদি
বিগত ১৫ বছর যাবৎ অর্থকরী ফসল হিসেবে সুখ সাগর নামের উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁয়াজের চাষ করে আসছিল মেহেরপুরের কৃষকরা। প্রথম দিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে এই পেঁয়াজের বীজ আমদানি করা হলেও এখন নিজেদের উৎপাদিত বীজ দিয়েই মাঠের পর মাঠ পেঁয়াজের চাষ করা হচ্ছে। লাভজনক এই চাষটি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় এই বছর দিন-চারেক আগেও পেঁয়াজের অব্যাহত দরপতনের ফলে সড়কের ওপর পেঁয়াজ ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছে চাষিরা। ২০১৯ সালের প্রথম দিকেও মেহেরপুরে সুখ সাগর পেঁয়াজ যখন উঠতে শুরু করে তখন দরপতনের ফলে অনেকেই জমি থেকে পেঁয়াজ না তুলে জমি চাষ করে দিয়েছেন। পেঁয়াজ চাষ করে লোকসান গুণতে গিয়ে এই চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল চাষিরা। কারণ, প্রতিবছর পেঁয়াজ উত্তোলনের সময় ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ফলে বাজার দর কমে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয় পেঁয়াজ চাষিদের। তবে এ বছর আবারও হাজার হাজার চাষি লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষ ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পেঁয়াজের চড়া মূল্য অব্যাহত থাকায় আবার এই চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, স্থানীয়ভাবে তৈরি বীজ দিয়ে পেঁয়াজ চাষ করের প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০ মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যায়। চাষিরা জানান, তারা তাদের তৈরি বীজ দিয়ে পেঁয়াজ রোপণ করে বিঘাপ্রতি ১৮০-২০০ মণ পিঁয়াজ উৎপাদনের আশা করছেন। পেঁয়াজের বর্তমান দাম বজায় থাকলে জেলায় কৃষকরা দ্রম্নতই স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। যদি দাম কমে যায়, সে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পেঁয়াজ সংরক্ষণে হিমাগারসহ এর বীজ উৎপাদনে সরকারি উদ্যেগের দাবি করেছেন মেহেরপুরের পেঁয়াজ চাষিরা। সদর উপজেলার বেলতলা পাড়ার জাহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালে তিনি প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে ১৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন। সেই পেঁয়াজ ২৫০-৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে তাকে আড়াই লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, দাম দেখে এবার মেহেরপুরের মানুষ ব্যাপকহারে পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। যেকোনো চাষই হোক না কেন, বাজারে চাহিদার চেয়ে অধিক উৎপাদন হলে বাজার দরে দরপতন হবেই। সেই ক্ষেত্রে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, বুঝে-শুনে চাষাবাদ করতে। শুধু পেঁয়াজ নয়, যেকোনো চাষ হোক না কেন, ভালো ফলন পেতে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।