বরেন্দ্রের মাঠে ধনিয়ার সুগন্ধি

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আসাদুজ্জামান মিঠু, তানোর
রাজশাহীর তানোরের একটি ধনিয়া খেত -যাযাদি
বরেন্দ্র অঞ্চলে এলে দেখা মিলবে উঁচু নিচু পটভুমি। মেঠো পথ বয়ে যেতেই দেখা যাবে পুরো মাঠ নানার রকম রবি শস্যে ভরপুর। এর মধ্যে কোথাও কোথাও ধনিয়ার সাদা ফুল ও সুগন্ধিতে ভরে উঠেছে মাঠ। এমন সব ফুলের সুগন্ধিতে পথচারি ও কৃষকদের মুগ্ধ করছে প্রকৃতি। বরেন্দ্র অঞ্চলে অন্যসব রবিশস্যের পাশাপাশি চলতি মৌসুমে ধনিয়া চাষ হয়েছে অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার ধনিয়ার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ধনিয়া চাষে খরচ কম ও রোগবালাই নেই বললেই চলে। এছাড়া অন্যসব রবিশস্যর চেয়ে ধনিয়াতে লাভের পালস্না বেশি। তাই রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা ধনিয়া চাষে ঝুঁকছেন। প্রতি বছরেই এমন কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে। রাজশাহী জেলার চারঘাট, বাঘা ও মোহনপুর উপজেলায় বেলে রস জাতীয় মাটিতে এ ধনিয়া চাষ মূলত হতো। কিন্ত গত দুই বছর ধরে বর্তমানে বরেন্দ্র অঞ্চলে কড়া মাটিতেও এ জাতীয় ফসল হচ্ছে। যার ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা অন্য ফসলের পাশাপাশি ধনিয়া (মসলা) চাষ করে অধিক লাভবান হবে বলে আশা কৃষিবিদদের। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত দুই বছর ব্যবধানে জেলায় তিনগুণ ধনিয়া চাষ বেড়েছে। গত দুই বছর আগে জেলায় যেখানে ১০০ হেক্টরের মতো ধনিয়া চাষ হতো। গত বছর থেকে হঠাৎ বেড়ে চাষাবাদ ২১৯ হেক্টর জমিতে। এবার চলতি মৌসুমে আরও ৩০ হেক্টর বেড়ে চাষ হচ্ছে ২৫০ হেক্টর জমিতে। আশ্বিন-কার্তিক মাসে বপন পদ্ধতিতে ধনিয়ার আবাদ শুরু হয়। আর ফলন পাওয়া যায় ফাল্গুন আর চৈত্রে। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর উপজেলার। এ উপজেলাতে চলতি রবি মৌসুমে প্রথম বারের মতো প্রায় ৫০ জনের বেশি কৃষক ধনিয়া চাষ করেছেন। এর মধ্যে মুন্ডুমালা গ্রামের জলিল নামের এক কৃষক এবার দুই বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষ করেছেন। কথা হয় কৃষক জলিলের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী চলতি মৌসুমে দুই বিঘায় ধনিয়া চাষ করা হয়েছে। ক্ষেতে ধনিয়া গাছে এখন সাদা ফুল রয়েছে, বাম্পার ফলন হবে বলে আশা তার। তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শমসের আলী বলেন, ধনিয়া উচ্চমূল্যের লাভজনক ফসল। তাই বরেন্দ্র অঞ্চলে ধনিয়া চাষে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এতে করে চাষিরা আধুনিক চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে ফলন বেশি করে আর্থিকভাবেও লাভবান হবেন।