রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে মেহেরপুরের আমঝুপি নীলকুঠি -যাযাদি
সরকারের দুই দপ্তরের টানাটানি, অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংস হতে চলেছে কালের সাক্ষী মেহেরপুরের ঐতিহাসিক আমঝুপি নীলকুঠি। ব্রিটিশ আমলে নীলচাষের উদ্দেশে ইংরেজরা ৬৭ একর জমির ওপর এই কুঠিবাড়ি গড়ে তোলে। আগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী কুঠিবাড়ি দেখতে গেলেও এখন আর দর্শনার্থীদের দেখা মেলে না। কুঠিবাড়ি সংরক্ষণে উদাসীনতা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহাসিক স্থানটি। সম্প্রতি ৩.৬১ একর কুঠিবাড়ির অংশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ঘিরে নিয়ে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করলেও শুধু প্রাচীর দিয়ে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে, কিন্তু দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে পারছে না।
ইংরেজদের শোষণ আর অত্যাচারের সাক্ষী মেহেরপুরের আমঝুপি নীলকুঠি। নীলচাষের উদ্দেশে ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা তৎকালীন নদীয়া জেলা ও বর্তমান মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে গড়ে তোলে এই কুঠি। জনশ্রম্নতি আছে, ইংরেজ বেনিয়া কেনি, সিম্পসন, ফার্গুসন ও তার সতীর্থদের অত্যাচার আর নির্যাতনে জর্জরিত হয়েছিল এলাকার কয়েক হাজার কৃষক। জোরপূর্বক তাদের দিয়ে নীলচাষ করানো হতো। ইংরেজরা চলে যাওয়ার সময় মেদিনীপুর জমিদারি কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে যায় কুঠিবাড়িসহ ৬৭ একর ভূ-সম্পত্তি। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় চলে আসে বাংলাদেশ সরকারের কাছে। ১৯৭৮ সালে ১৩ মে তারিখে খুলনা বিভাগ উন্নয়ন বোর্ডের আমঝুপি অধিবেশনে কুঠিবাড়িটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়। এরপর থেকে আর কোনো পরিচর্যা ও সংরক্ষণে উদ্যোগী না হওয়ায় জৌলুশ হারাচ্ছে কুঠিবাড়িটি। ঐতিহাসিক স্থানটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি এলাকাবাসীর।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল আলম বলেন, ঐতিহাসিক এই জায়গাটি পর্যটন হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে সরকারের যেমন রাজস্ব আয় হবে, পাশাপাশি ঐতিহাসিক স্থানটিও সংরক্ষিত হবে।