নওগাঁয় করোনায় বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

নওগাঁ প্রতিনিধি
করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। সারাদেশে সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের জনসমাগম নিষেধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতনতার জন্য মাস্ক ও জীবাণুমুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে। করোনার প্রভাব পড়েছে নওগাঁতেও। গত তিনদিন থেকে নওগাঁর রাস্তাঘাটে যানবাহন, অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল চলাচল অনেকটা কমে গেছে। শহরের রাস্তাঘাটে অটোরিকশা ও ভ্যান তেমন চোখে পড়ছে না। বড় বড় শপিংমল ও বিপণী বিতানগুলো একেবারে বন্ধ থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে এ জেলা শহর। এতে করে আতঙ্কে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা বিপাকে পড়েছেন। আয়-রোজগারের কোনো পথ না থাকায় তারা ঘরে থাকতেও পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ভাড়ার আসায় নওগাঁ সদর হাসপাতালের গেটে সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন কয়েকজন রিকশাচালক। তাদের মধ্যে সদর উপজেলার কানমটকা গ্রামের রিকশা চালক বয়োজ্যেষ্ঠ আজিজার রহমান বলেন, বাড়িতে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। প্রতিদিন খাওয়া খরচ প্রায় ২শ' টাকা। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছেন ও সংসারের কাজে ব্যয় করেছেন। সপ্তাহে ১ হাজার ৮০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬শ' টাকা ভাড়া পেতেন। গত দুইদিন থেকে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য পুলিশ মাইকিং করছে। এজন্য ভ্যান নিয়ে বের হতে পারেননি। তিনি বলেন, অবস্থা খুব খারাপ। করোনার কারণে বাহিরে মানুষ তেমন বের হচ্ছে না। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে পেট চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন। যা একটু জমিয়েছিলেন ঘরে বসে থেকে শেষ হওয়ার উপক্রম। এছাড়া ভয়ে বাহিরে বেরুতে পারছেন না। পুলিশ পিটালে- পিটুনি খাওয়া যাবে। কিন্তু রিকশা ভেঙে দিলে সহজে কিনতে পারবেন না। এই ভয়ে রিকশা বের করেননি। জেলার মহাদেবপুর উপজেলার আন্ধারকোটা গ্রামের রিকশাচালক রকিব উদ্দিন বলেন, এনজিও থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২ মাস আগে ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছেন। প্রতি মাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। গত তিনদিন রিকশা বের করতে পারেননি। এলাকার রোগী খুব জোরাজুরি করায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন। রিকশা পড়ে থাকলে আবার ব্যাটারির সমস্যা হবে। তাই একটু বের করেছেন। সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ২শ' টাকা ভাড়া পেয়েছেন। করোনা আতঙ্কে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাই আতঙ্কিত না হয়ে আগামী দুই সপ্তাহ ঘরে সময় কাটানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সচেতন করা হচ্ছে।