জীবাণুনাশকের তীব্র সংকট

মাদারীপুরে শিশুসহ কয়েক লাখ মানুষ করোনা ঝুঁকিতে

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২০, ০০:০০

মনজুর হোসেন, মাদারীপুর
মাদারীপুর করোনাভাইরাসের চরম ঝুঁকিতে থাকায় হঠাৎ করে জীবাণুনাশক ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জীবাণুনাশক ওষুধের মধ্যে হেক্সিসল, স্যাভলন, স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গস্নাভস ও হ্যান্ড ওয়াশসহ অন্যান্য পণ্য এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। জীবাণুনাশক ওষুধ না পাওয়ায় করোনার চরম ঝুঁকিতে রয়েছে জেলার শিশুসহ কয়েক লাখ মানুষ। জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট নেতাদের ধারণা ঢাকার মিডফোর্ট এলাকায় সম্ভবত একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। জেলা ওষুধ প্রশাসনের দাবি খুব দ্রম্নত এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের চরম ঝুঁকিতে আছে মাদারীপুর জেলা। করোনার ঝুঁকি এড়াতে বাসা-বাড়িতে ব্যবহারের জন্য জীবাণুনাশক পণ্য এখন পাওয়া দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। জেলার কালকিনি, শিবচর, রাজৈর ও সদর উপজেলার কোনো ওষুধের ফার্মেসিতে এসব জীবাণুনাশক ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো জেলার মানুষ। কয়েকজন ওষুধের দোকানের মালিক জানান, অর্ডার করেছেন অনেক আগে এখন পর্যন্ত পাননি। ক্রেতারা এসে ফিরে যাচ্ছে। দোলা বিশ্বাস নামে এক ক্রেতা জানান, 'স্যাভলন কিনতে গিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো দোকানে গিয়ে স্যাভলন পাননি। সব সময় করোনা আতঙ্কে আছেন। শহরের চায়না শেখ নামের এক গৃহিণী বলেন, বাসায় ছোট্ট ছেলে আছে। ছেলের গোসল করাতে ও বাসাকে জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য জীবাণুনাশক মেডিসিন কিনতে পারছেন না। মাদারীপুরের কোনো দোকানে জীবাণুনাশক মেডিসিন নেই। দ্রম্নত এসব মেডিসিন কিনতে না পারলে পুরো পরিবার করোনার চরম ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। এ জন্য সরকারের দ্রম্নত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। শহরের কলেজ রোডের নিরাময় হাসপাতাল সংলগ্ন সিন্‌হা ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী আলী আজম সরদার বলেন, বাজারে জীবাণুনাশক ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বিক্রি করতে পারছেন না, কাষ্টমার এসে ফিরে যাচ্ছে। সদর হাসপাতাল রোড এলাকার আরোগ্যালয় ফার্মেসির মালিক মতিউর রহমান বলেন, জীবাণুনাশক ওষুধের যে পরিমাণ চাহিদা আছে, সে অনুযায়ী কোম্পানি ওষুধ তৈরি করেছে না। মাদারীপুর কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাকিব হাসান বলেন, তারা মূলত ঢাকার মিডফোর্ট থেকে এসব মেডিসিন, হ্যান্ড গস্নাভসসহ অন্যান্য উপকরণ এনে থাকেন। কিন্তু ওখানে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা মনে করছেন, ওখানে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। বাংলাদেশে অল্প কিছু মানুষ এইসব মেডিসিন ও হ্যান্ড গস্নাভসের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই সরকারের এই দিকে নজর দেওয়া দরকার। সমিতির সভাপতি তাপস কুমার দাস বলেন, জেলায় এসব পণ্যের যে পরিমাণ চাহিদা তার ১০০ ভাগের ৫ ভাগ পাচ্ছেন না। কোনো কোম্পানির সরবরাহ নেই। হেক্সিসল, জীবাণুনাশক লিকুইড এসব পণ্যের উপর যেহেতু সরকার শুল্কমুক্ত করেছে, তাই প্রতিটি কোম্পানির উচিত সেভাবে তৈরি করা। এখন সাপস্নাই পেলে জনগণকে সরবরাহ করতে পারবেন। মাদারীপুর ওষুধ প্রশাসনের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক বীথি রানী সরকার বলেন, হঠাৎ করে এসব জীবাণুনাশক মেডিসিনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাপস্নাই দিতে সমস্যা হচ্ছে। মাদারীপুরে দুটি কোম্পানির ডিপো আছে। তাদের সঙ্গে বসে সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্ট করবেন।