অঘোষিত 'লকডাউনে' বিপাকে সাটুরিয়ার নিম্নআয়ের মানুষ

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২০, ০০:০০

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
করোনাভাইরাসের প্রভাবে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সর্বত্রই চলছে অঘোষিত লকডাউন। এতে নিম্নআয়ের মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। লোকজন সংক্রমণ আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। সেই সঙ্গে কমে গেছে নিম্নআয়ের মানুষদের আয়। এসব নিম্নআয়ের মানুষ পেটের দায়ে রাস্তায় বের হলেও পুলিশ তাড়িয়ে দিচ্ছে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে বিভিন্ন সড়কে ৪ সহস্রাধিক রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, হ্যালোবাইক, ঘোড়ার গাড়িসহ মালবাহী গাড়ি চলতে দেখা যেতো। আর প্রতিদিনের আয় দিয়েই চলতো তাদের সংসার। এছাড়া অসংখ্য মানুষ বাইরে দিনমজুরের কাজ করতেন। এখন তাদের কোনো কাজ না থাকায় পড়েছেন মহা বিপাকে। করোনা আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারায় তাদের আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব নিম্নআয়ের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জীবিকার তাগিদে তারা বাইরে বের হলেও পুলিশের আতঙ্কে থাকেন। এরপরও পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে রিকশাচালক ও দিনমজুররা কাজে বের হচ্ছেন পেটের তাগিদে। এমনকি দুই থেকে তিন দিন ধরে রাস্তায় লোকসমাগম বন্ধ হওয়ায় গাড়ি চালকরা বাড়ি ফিরছেন খালি হাতে। এদিকে, পুলিশ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিম্নআয়ের মানুষসহ সবাইকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এরপরও যারা বের হচ্ছে তাদের ঘরে রাখতে তাদের মাঠে থাকতে হচ্ছে। সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্যানচালকরা বলেন, পেটের দায়ে ভ্যান নিয়ে বসে আছেন। কোনো যাত্রী নেই। আগে তিন থেকে পাঁচশ টাকা রোজগার করতেন। এখন করোনা আতঙ্কে কেউ ঘর থেকে বের হয় না। তাদের মতো সব ভ্যানচালকই বসে আছে সারাদিন ধরে। তারা আরও বলেন, আজকে ৫০ টাকাও রোজগার করতে পারেননি, আবার কিছুক্ষণ পর পর পুলিশের তাড়া খেতে হচ্ছে। এখন সংসার চালানো তাদের দায় হয়ে পড়েছে। এই দুর্দিনে তাদের পাশে কেউ নেই। সাটুরিয়া সদর ইউনিয়নসহ ৯টি ইউনিয়নে বুধবার থেকে নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া অন্য সব দোকানপাট বন্ধ হওয়ায় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। প্রতিদিনের আয় দিয়ে চলে তাদের সংসার। তারা বলছেন, একদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না, অন্যদিকে রোজগারের পথও বন্ধ। এভাবে কতদিন দোকানপাট বন্ধ থাকবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ। তাই কীভাবে তাদের সংসার চলবে, তা নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে কমিটির মাধ্যমে নিম্নআয়ের মানুষের নামের তালিকা সম্পন্ন হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি ডিটারজেন্ট পাউডার দেওয়া হচ্ছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।