তালায় শজিনার বাম্পার ফলন

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২০, ০০:০০

তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার তালায় শজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাতাশূন্য গাছে ধবল ফুল ইতোমধ্যে পরিণত হয়েছে শজিনায়। গাছে গাছে ঝুলে থাকা সবুজ লাঠি প্রকৃতিতেও ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। তালা কৃষি অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় চলতি বছর ১৫ হাজার গাছে শজিনা হয়েছে বলে জানা যায়। ইংরেজিতে শজিনার নাম ড্রামস্টিক, যার অর্থ ঢোলের লাঠি। অদ্ভুত নামের উদ্ভিদটি জীবন রক্ষাকারী হিসেবে অতি প্রয়োজনীয় ও পরিচিত। এ গাছের পাতা, ফুল, ফল, ছালবাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। শজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি বৃক্ষ। অলৌকিক গাছ হিসেবে শজিনা পরিচিত বিশ্বজুড়ে। পুষ্টিসহ নানা গুণের কারণে শজিনা গাছকে যাদুর গাছও বলা হয়ে থাকে। শজিনার কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভর্তা করে ও বড়া বানিয়ে ভেজে খাওয়া যায়। সবজি হিসেবে শজিনার চাহিদা সব সময়ই বেশি। এছাড়া এর ফল পাকলে বীজ বাদামের মতোও ভেজে খাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শুভ্রাংশ শেখর দাশ জানান, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হাজার শজিনা গাছ রয়েছে। তবে এর মধ্যে উপজেলা মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চলতি বছর কৃষকদের সাড়ে ৬ হাজার শজিনা গাছ লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এছাড়া প্রায় প্রতি বাড়িতে তিন-চারটি শজিনা গাছসহ জমির আইলে, রাস্তার পাশেও শজিনা গাছ লাগানো হয়েছে। যার পরিমাণ সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি। কোনো প্রকার যত্ন ও পরিচর্যা ছাড়াই লোকালয়ে এসব গাছ বেড়ে উঠেছে। দেশে মূলত দুইটি প্রজাতির শজিনা ও নজিনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। শজিনার ফুল আসে জানুয়ারি মাসে আর নজিনার ফুল আসে মার্চ মাসের দিকে। তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না। প্রতি থোকায় ১০০ থেকে দেড়শর মতো ফুল ধরে। ফুল ৪০ সেন্টিমিটার থেকে ৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুল ফোটার দুই মাস পর শজিনা তোলা যায়। একটি বড় গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ফল ধরে। প্রতিটি ফলে ৩০ থেকে ৪০টি বীজ হয়। সাধারণত ডাল রোপণ করে শজিনা গাছ লাগানো হয়। মৌসুম শেষে প্রতিবারের মতো এবারও ডাল রোপণ করা হবে। বর্তমানে প্রতি কেজি শজিনার মূল্য ১৫০ টাকা হতে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উচ্চমূল্য পাওয়ায় শজিনার ডাল রোপণ করতে চাষিরাও অতি উৎসাহিত হচ্ছেন। পুষ্টি ও ভেষজগুণে ভরা সবজি হিসেবে শজিনার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া বাজারে সব শ্রেণির ক্রেতার কাছে এর গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। এ ব্যাপারে তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শুভ্রাংশ শেখর দাশ আরও জানান, ঠান্ডা-গরম, লবণ, খরা সহিষ্ণু হলেও এ গাছ বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্ম নেয়। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি বছর শজিনার ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়া নজিনা গাছেও ঈর্ষণীয় ফুল ধরেছে। আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান থাকলে নজিনার বাম্পার ফলনও আশা করা যায়। বাজারে পুষ্টিগুণ ও চাহিদার কারণে প্রতি বছর এর আবাদ বাড়ছে।