নওগাঁয় করোনার প্রভাবে হাসপাতাল রোগীশূন্য

নার্সদের নেই পিপিই

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২০, ০০:০০

নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁ সদর হাসপাতালে করোনা আতঙ্কে রোগীশূন্য ওয়ার্ড -যাযাদি
করোনা আতঙ্কে নওগাঁ সদর হাসপাতালে কমেছে রোগী। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ডগুলো এখন অনেকটাই ফাঁকা। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে এক সময় যেখানে রোগীদের তিল ধারণের জায়গা থাকত না। এখন তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। বলতে গেলে নার্সরাও অলস সময় পার করছেন। তবে করোনা আতঙ্কে নার্সরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডাক্তারদের যেভাবে সুরক্ষিত পোশাক ও অন্যান্য উপকরণ দেয়া হয়েছে সে তুলনায় তাদের কিছুই দেয়া হয়নি। আতঙ্কের মধ্য দিয়েই রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে। সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে পুরুষ ওয়ার্ডে ৬৭ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ১৩০ ও শিশু ওয়ার্ডে ১৩০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। ২৫ মার্চ থেকে মেডিসিন বিভাগে পুরুষ ওয়ার্ডে ৮ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ১০ এবং শিশু ওয়ার্ডে ৬ জন ভর্তি রয়েছে। তারা সবাই জ্বর, সর্দি ও দুর্ঘটনার রোগী। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে দেখা যায়, গাইনি চিকিৎসক ডা. সুলতানা আফরোজ রুমি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। জরুরি বিভাগের ঘরে ঢুকতে দরজার সামনে দুটি চেয়ারে দড়ি টেনে দেয়া আছে। পাশেই রাখা হয়েছে রোগী বসার চেয়ার। সেখান থেকে পাঁচ ফুট দূরত্বে বসে তিনি রোগীদের কাছ থেকে শুনে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ১২টি বেডের মধ্যে ১টি বেডে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বুধবার বিকাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে আসাদুল হাকিম নামে এক রোগী। এছাড়া মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডে ১২ বেডের মধ্যে ৩টি বেডে রোগী আছে। যে হাসপাতাল এক সময় রোগীদের আনাগোনায় ব্যস্ত থাকত। এখন সেখানে ২৪ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। বলতে গেলে করোনা আতঙ্কে হাসপাতাল রোগীশূন্য। সুনসান নীরবতা। নার্সের সুপারভাইজার জাহানারা খানম বলেন, হাসপাতালে নার্সের সংখ্যা ৬৫ জন। গত কয়েকদিন আগে কয়েকজনকে মাস্ক দেওয়া হয়েছে। অনেকে নিজেরাই কিনে নিয়েছে। এখনো সাবান, হ্যান্ডওয়াশ, গস্নাভস দেওয়া হয়নি। নার্সদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। অথচ ডাক্তারের পরেই তাদের স্থান। ডাক্তারদের পিপিই দেওয়া হয়েছে। ডাক্তাররা দূর থেকেই রোগী দেখছেন। কিন্তু নার্সদের রোগীর কাছাকাছি থেকে সেবা দিতে হয়। তারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। সিভিল সার্জন ডা. আখতারুজ্জামান আলাল বলেন, করোনা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং সেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ এসেছে। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- পিপিই ৫০ সেট, ছোট গস্নাভস ১০০টি, মাঝারি গস্নাভস ১০০, বড় গস্নাভস ১০০, ৫০ এমএল হেক্সিসোল ১০০ বোতল, মাস্ক ২০০টি, এমওপি ক্যাপ ৫০, গাউন ৫০, সু-কভার ৫০ এবং চশমা ৫০টি। এসব সামগ্রী জেলার ১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে বিতরণ করা হয়েছে। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুমিনুল হক বলেন, চাহিদার তুলনায় পিপিই অপ্রতুল। যেসব নার্স ডিউটিতে থাকবে তাদের জন্য কিছু মাস্ক ও সাবান দেওয়া হয়েছে। আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে।