রাজবাড়ীতে অনাহারে উত্তরবঙ্গের দিনমজুররা

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০২০, ০০:০০

মতিউর রহমান, রাজবাড়ী
কাজের খোঁজে উত্তরবঙ্গ থেকে রাজবাড়ীতে এসে আটকা পড়েছে অর্ধশতাধিক দিনমজুর। যারা আশ্রয় আর কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভুগছে খাবার সংকটে। যারা বেশির ভাগই এসেছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে। দিনমজুরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের এ সময়টাতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে তেমন কোনো কাজ থাকে না। যে কারণে বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কাজের খোঁজে আসে রাজবাড়ীতে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর সঙ্গে রাজবাড়ীর রেল যোগাযোগ সহজ হওয়ায় তারা নকশীকাঁথা মেইল ট্রেনে রাজবাড়ীতে আসে। রেল স্টেশন এলাকা থেকে দিনচুক্তি চারশ থেকে পাঁচশ টাকা করে তারা কাজে যায়। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় এসব শ্রমিক এখন বেকার। তারা কাজ দূরের কথা, আশ্রয় ও খাবার সংকটে ভুগছে। বাস, ট্রেন বন্ধ থাকায় তারা ফিরতেও পারছে না বাড়িতে। অন্য সময়ে এসব শ্রমিক রেল স্টেশনে রাত কাটানোর সুযোগ পেলেও এখন সে সুযোগও নেই। শনিবার সকালে রাজবাড়ী রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাপড়ের পুঁটলি অথবা ব্যাগ হাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন জায়গায়। স্টেশনের বাইরে বসে থাকা চার শ্রমিককে ডেকে পস্নাটফর্মে এনে কথা হয় তাদের সঙ্গে। জয়পুরহাট জেলার কুসুমমারা গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান জানান, সংসারে তার মা, স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে আছে। তার একার আয়ে চলে সংসার। আট দিন আগে তিনি নকশীকাঁথা মেইল ট্রেনে রাজবাড়ীতে এসেছিলেন কাজের খোঁজে। কাজ পেয়েছিলেন। দিনচুক্তি চারশ টাকায় পাঁচ দিন কাজ করে যা পেয়েছিলেন তার বেশির ভাগ টাকা বিকাশ করে বাড়ি পাঠিয়েছেন। এখন পকেটে যা আছে তা দিয়ে বড়জোর এক দিন চলতে পারে। কিন্তু খাবার পাবেন কোথায়? সব রেস্তোরাঁ বন্ধ। ঘুরে ফিরে দোকান খোলা পেলে রুটি, পাউরুটি, বিস্কুট যা পাচ্ছেন তা খাচ্ছেন। রাতে থাকার জায়গা পাচ্ছেন না। আতাউরের মতো তাহের ও আসাদুর জানালেন একই রকম কথা। জানালেন, বাড়ি ফেরার জন্য মনটা অস্থির হয়ে উঠছে। রাজবাড়ী জিআরপি থানার ওসি আকবর হোসেন জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় কাউকে রেল স্টেশনে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম জানান, বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।