আড়াইহাজারে লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি, ব্যবসা জমজমাট

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০২০, ০০:০০

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন বাজারের অলি-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের সহস্রাধিক ফার্মেসি। ওষুধ প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অনেকেই ফার্মেসি দিয়ে বসে পড়েছেন ওষুধ বিক্রির ব্যবসায়। ফার্মেসিগুলো চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, ভারতীয় নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানা প্রকার ওষুধ বিক্রি করছে অবাধে। এ ছাড়া নেই কোনো প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট। ফলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রোগীরা। এতে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক রোগী ও তাদের পরিবার-পরিজন। আড়াইহাজার উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাজারে গড়ে উঠেছে ফার্মাসিস্ট প্রশিক্ষণ ছাড়া ও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন শতশত ফার্মেসি। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নে যোগযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় ও অতিরিক্ত ভিজিটের কারণে প্রত্যন্ত এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, গর্ভবতী মহিলারা মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে ও রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে আসেন না। তারা তাদের পার্শ্ববর্তী বাজারের ফার্মেসির স্মরণাপণ্য হয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ওষুধ নেয়। ফার্মেসিগুলোতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চমাত্রায় এজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক, ঘুমের বরি, ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, নিষিদ্ধ ভারতীয় নকল মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানা প্রকার ওষুধ অবাধে বিক্রি করে আসছে। ফলে একদিকে যেমন ওষুধ ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা, অন্যদিকে, ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ আইনের তোয়াক্কা না করে অনেকেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি না পার করেই কম খরচে বেশি লাভের আসায় ফার্মেসি বা ওষুধের দোকান নিয়ে বসে। সাধারণত এবিসি, এই তিন ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট রয়েছে দেশে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা হলেন, 'এ' ক্যাটাগরির। চার বছর মেয়াদি ডিপেস্নামা কোর্সধারীরা 'বি' ক্যাটাগরির। আর তিন মাসের কোর্সধারীরা 'সি' ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট। উপজেলার যেসব ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট রয়েছে, তাদের ৯৯ শতাংশ 'সি' ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট। এমনও রয়েছে যারা কোনো ক্যাটাগরিতেই পড়ে না। এদিকে গত বছরের ১৪ মে অনুমোদনহীন অবৈধ ওষুধ বিক্রি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে আড়াইহাজার উপজেলা সদরের কয়েকটি ফার্মেসিকে পাঁচ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায়সহ মুচলেকা নেয়া হয়। এরপর প্রায় আট মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান চালানো হয়নি। আড়াইহাজার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ হোসেন বলেন, ফার্মেসি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এখানে একজন দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তির সার্বক্ষণিক থাকা ও ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স থাকা প্রয়োজন। এসবের ব্যত্যয় ঘটে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।