দেলদুয়ারের মাঠে হাসছে সূর্যমুখী

প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

মাসুদ রানা, দেলদুয়ার (টাঙ্গাইল)
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে সূর্যমুখী ফুলের খেত -যাযাদি
সূর্যমুখীর একটি ফুল যেন সৌন্দর্যের রানি। তাই এ সূর্যমুখী নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা। তেলজাত শস্য হলেও প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়ে তা এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে দেলদুয়ারের মাঠে মাঠে। দেলদুয়ারের মাঠ যেন এখন সুসজ্জিত ফুলের বাগান। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে বেশ কয়েকজন কৃষকের মাঠে ফুটেছে সূর্যমুখী। উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের স্বল্পলাড়ুগ্রাম ধলেশ্বরী নদীর তীরে এমনই মনোমুগ্ধ কর দৃশ্য চোখে পড়ে। সূর্যমুখী মাঠের পাশে এসে গেলে যে কেউ দেখে কিছু সময় কাটাতে চাইবে সেখানে। তবে সূর্যমুখী পরিপক্ব হতে আর তেমন সময় বাকি নেই। কৃষি অফিসের মাধ্যমে লাভের হিসাব মেলাবে চাষীরা। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় প্রায় ৩শ' ৩০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে ১০ জন কৃষককে দিয়ে সূর্যমুখী চাষ করেছেন কৃষি বিভাগ। সে জন্য প্রশিক্ষণসহ সার ও বীজ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতাও করা হয়। এছাড়া সূর্যমুখী পরিপক্ব হলে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেই ক্রয় করা হবে বলে জানান কৃষি বিভাগ। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার লাউহাটি, স্বল্পলাড়ুগ্রাম, ভবানিপুর, এলাসিন গ্রামে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। লাউহাটি ইউনিয়নের স্বল্পলাড়ু গ্রামের তেলজাত শস্য সূর্যমুখী চাষী মো. আরিফ মিয়া জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শে তার ৩৩ শতাংশ অনাবাদি জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরামর্শও দেন কৃষি অফিস। বর্তমানে তার জমিতে অনেক ভালোভাবে বেড়ে ওঠেছে সূর্যমুখী। তবে লাভজনক হলে আগামী বছর তিনি আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী চাষ করবেন। আরিফের পাশেই নুরনবী চাষ করেছে সূর্যমুখী। কিন্তু তেমন ভালো হয়নি। নুরনবী জানান, যদি লাভজন হয় আগামীতে যত্ন নিয়ে চাষ করবেন তিনি। স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় তামাক চাষ বেশি হয়। তবে সূর্যমুখী চাষে লাভজনক হলে তামাক চাষ ছেড়ে তারা সকলেই সূর্যমুখী চাষ করবে বলে জানান। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় তামাকের পরিবর্তে সূর্যমুখীর চাষে খুশি হয়েছেন অনেকে। সে কারণে যুবক বয়সিরা বিকেল হলেই সূর্যমুখী মাঠের পাশে এসে বিভিন্ন রকম ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়। মাঠের পাশে বেশ সময় কাটিয়ে চলে যায়। সূর্যমুখী কৃষকের সযত্নে চাষ করা তৈলজাত শস্য। কেউ কেউ আবার দুই একটা ফুল ছিঁড়ে নিয়েও যায়। লাউহাটি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, তিনি সূর্যমুখী চাষ বিষয়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেন। দেলদুয়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শোয়েব মাহমুদ বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তেলজাত শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে এ বছর উপজেলার ১০ জন কৃষককে সূর্যমুখী চাষে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এতে সার ও বীজ কৃষকদের বীনামূল্যে বিতরণ করা হয়। তবে আগামী বছরে আরও ব্যাপক আকারে সূর্যমুখীর চাষ বাড়ানো হবে।