করোনাভাইরাস আতঙ্ক

হাওড়ে শ্রমিক সংকটে অনিশ্চয়তায় ধান কাটা

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

মন্তোষ চক্রবর্তী, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ)
হাওড় অঞ্চলে আর মাত্র কয়েকদিন পরই ধান কাটার ধুম পড়বে। কিন্তু বর্তমানে করোনার প্রভাবে শ্রমিক না পাওয়ায় বোরো ধান কাটতে পারবেন কি না এই শঙ্কা কৃষকদের মাঝে। এছাড়াও হাওড়ের সব উন্নয়ন কাজেও শ্রমিক সংকটে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। এই সংকট আর চরম দুশ্চিন্তা চলছে হাওড় উপজেলা অষ্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার কৃষকদের। বাম্পার ফলন হওয়ার আনন্দের পরিবর্তে জীবন রক্ষা করার পথ যেন খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষকরা। প্রচুর ধান পেলেও ঘরে নিতে পারবে কি না এই দুশ্চিতায় সময় পার করছেন তারা। বোরো উৎপাদনের ওপর এই হাওর অঞ্চলের ৮৫ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। উৎপাদিত ফসলের ২০ শতাংশে স্থানীয় খাদ্য পূরণ করে ৮০ ভাগ জাতীয় খাদ্য সংযোগ হয়। সূত্র জানায়, অষ্টগ্রামসহ হাওড় অঞ্চলের কৃষকরা বর্ষার ৬ মাস পানিতে একাকার হয়ে যাওয়ায় বেকার দিন কাটায়। ফলে একমাত্র ফসল বোরো উৎপাদন ছাড়া এ অঞ্চলের মানুষের বাঁচার কোনো পথ নেই। গত কয়েক বছর দফায় দফায় উপজেলায় অকাল বন্যায় ৯০ ভাগ ফসলহানি হয়। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ফসলহানির ফলে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। উপজেলার কৃষকরা লাখ লাখ টাকা সরকারি, এনজিও ও মহাজনদের কাছে ঋণ নিয়ে বোরো আবাদ করেছে। বাম্পার ফলনে বুক ভরা আশা নিয়ে কৃষকরা মাঠে নামে। কিন্তু করোনার দুর্যোগের কারণে দেখা দিয়েছে সংকট। এ এলাকায় রংপুর, ঠাকুরগাঁও, কুমিলস্না, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে দিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে করোনার প্রভাবে শ্রমিক সংকটে কৃষকরা যেন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জের হাওড় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাউবোর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড, সওজ, এলজিইডি, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ওপর পড়েছে করোনার প্রভাব। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল আলম জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় অটোবাইক ও রিকশাচালকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে, তাই ধান কাটার জন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল আলম জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পূর্বে আসা শ্রমিক সদারদের সঙ্গে এলাকার কৃষকরা যোগাযোগ করছে। তাদের আসার জন্য পরিবহণের বিষয়টি দেখা হচ্ছে। তাছাড়াও কিছু আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতিও রয়েছে যেগুলো কাজে লাগানো হবে।