করোনা আতঙ্কে ডাক্তারশূন্য আনোয়ারার হাসপাতাল!

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)
করোনাভাইরাস আতঙ্গে ভেঙে পড়েছে আনোয়ারা উপজেলার চিকিৎসাসেবা। ডাক্তারশূন্য হওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সেবা নিতে আসা রোগীরা। এ ছাড়াও ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা ক্লিনিক্যাল ল্যাবগুলোতেও গত ১৫ দিন ধরে বসছে না কোনো ডাক্তার। কিছু ল্যাব খোলা দেখা গেলেও নেই চিকিৎসক। উপজেলার একমাত্র সরকারি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা হলেও ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে রোগীরা। সোমবার দুপুর ১২ টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বহির্বিভাগে কোনো ডাক্তার না থাকায় রোগীশূন্য বহির্বিভাগ। জরুরি বিভাগেও যথাযথ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ জনগণের মাঝে। তাই সাধারণ রোগের লক্ষণে আতঙ্কিত হয়ে তারা ছুটছেন হাসপাতাল-ক্লিনিকে। হাসপাতালে গিয়ে সেবাদাতাদের অসহযোগিতা আর বিরূপ আচরণে ক্ষুব্ধ রোগী ও স্বজনরা। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছে সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে গত দুই সপ্তাহ ধরে ৩-৪ জন ডাক্তারই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন আনোয়ারা হাসপাতালে। বহির্বিভাগে কোনো ডাক্তারই বসে না। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগীকে বাড়ি ফিরতে হয়। উপজেলার চাতরী চৌমহনী বাজারে অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার দি ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির উদ্দিন বলেন, তার ল্যাবে ৫ জন চিকিৎসক নিয়মিত রোগী দেখতেন, করোনা মহামারি ছড়ানোর পর ডাক্তারদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করার পরও তাদের চেম্বারে আনা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে, চৌমহনী মোহচেন আউলিয়া ল্যাব গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। সেভরণ আনোয়ারা শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতিতে আনোয়ারার সাধারণ মানুষের যাতে বিঘ্ন না হয় সেই লক্ষ্যে সেভরণ সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দৈনিক ৫-৬ জন ডাক্তার চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ডাক্তার এবং রোগীদের সুরক্ষাসামগ্রী দিয়েই চিকিৎসাসেবা দৌয়া হচ্ছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু জাহেদ মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন বলেন, করোনার ঝুঁকি এড়াতে হাসপাতালের জনবল কমানো হয়েছে। তাই আউটডোরের পরিবর্তে রোগীদের জরুরী বিভাগে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আনোয়ারা হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, রোগীদের স্বাস্থবিধি মেনে যথাযতভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ইউএনও শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, হাসপাতালে ডাক্তার ও রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরই মাঝে যদি ডাক্তারদের অনুপস্থিতি ও গাফিলতি থাকে তবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।