করোনায় হাওড়ে ধানকাটা শ্রমিক সংকট

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)
করোনাভাইরাসের কারণে এক এক করে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ হয়ে পড়ছে গৃহবন্দি। এ অবস্থায় সুনামগঞ্জের হাওড় উপজেলা তাহিরপুরে ধানকাটা শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার জমিগুলোর ধান পাকতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে পালস্না দিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে কৃষকের মনে। শ্রমিক সংকটের কারণে সোনালি ধান কাটতে পারবেন তো- এ প্রশ্ন এখন হাওড় পারের হাজারো কৃষকের মনে। কৃষকরা জানান, বোরো ধান কাটতে প্রচুর শ্রমিক লাগে। হাওড়ের জমির মাটি নরম থাকায় ধান কাটার মেশিন দিয়ে কাটা যায় না। তাই তারা তাদের রোপণকৃত ধান নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন। একদিকে নিজেও যেমন ঝুঁকিতে রয়েছেন অন্যদিকে জমির ফসলও পড়ছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ২৩টি ছোট বড় হাওড়ে চলতি বছর ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। বিভিন্ন হাওড়ের ধান পাকতে শুরু করেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই পাকা ধানের সোনালি রঙে ছেয়ে যাবে হাওড় এলাকা। কিন্তু করোনার প্রভাবে শ্রমিক না পাওয়ায় বোরো ধান কাটতে পারবেন কি না এই শঙ্কা কৃষকে মধ্যে। বোরো উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে এ উপজেলার ৮০ ভাগ কৃষক। বর্ষায় হাওড়গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষক সেখান থেকে কিছু পান না। বোরো উৎপাদন থেকে যা পান তা দিয়ে সংসার চলে। তা ছাড়া কৃষকরা সরকারি, এনজিও ও মহাজনদের কাছে ঋণ নিয়ে বোরো আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হলে ঋণ পরিশোধ করবেন। কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে দেখা দিচ্ছে নানা সমস্যা। এক সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শ্রমিক আসত ধান কাটতে। গত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে দূর-দূরান্তের শ্রমিকরা ধান কাটতে আসেন না। স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে সামান্য কিছু শ্রমিক ধান কাটতে আসেন। বর্তমানে করোনার কারণে আশপাশের উপজেলা থেকেও শ্রমিক আসবেন না। ফলে এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শনির হাওড় পার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক জাক্কার হোসেন বলেন, বর্গাতে কিছু জমি চাষাবাদ করেছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ধান পাকবে। কিন্তু ধানকাটা শ্রমিকের সন্ধান পাচ্ছেন না। তাই চিন্তায় রয়েছেন। উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে আগামী দিনগুলো কী হবে এখনই বলা যাচ্ছে না। করোনা প্রভাব বাড়তে থাকলে শ্রমিক সংকট দেখা দেবে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানর্জি বলেন, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি করোনার প্রভাব কমে তাহলে শ্রমিক সংকট থাকবে না।