শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ফাঁসি এড়ানো আসলাম ফের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

যাযাদি ডেস্ক
  ০১ জুন ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ০১ জুন ২০২০, ১১:১৪
আসলাম ফকির

রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ফাঁসি এড়ানো ফরিদপুরের আসলাম ফকির তিন বছরের মাথায় ফের একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে। রোববার ভোর ৬টার দিকে যশোরের চৌগাছা উপজেলার একটি ভাড়া বাসা থেকের্ যাবের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। র্ যাব ৮-এর ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক দেবাশীষ কর্মকার বলেন, ৫০ বছর বয়সি আসলাম ফকিরকে চৌগাছা থেকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুর আনা হয়। পরে তাকে ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়। রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ফাঁসির দন্ড থেকে রক্ষা পেয়ে কারামুক্ত হওয়ার তিন বছরের মাথায় গত এপ্রিলে আবারও হত্যা মামলায় জড়ান ফরিদপুর সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম ফকির। গত ২১ এপ্রিল ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের লক্ষ্ণীপুর গ্রামে দুই পক্ষের সংঘাতের মধ্যে একজন নিহতের ঘটনায় ওই মামলা হয়। ঘটনার পরদিন স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান মাতুব্বর (৫৪) বাদী হয়ে হত্যা, ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। আসলাম ফকিরসহ ৫৪ জনের নাম উলেস্নখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে ওই মামলায় আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২১ এপ্রিল রাতে লক্ষ্ণীপুর গ্রামের লতিফ মাতুব্বরের ঘরের টিনের চালের পানি শাজাহানের ভাতিজা রফিক মাতুব্বরের বাড়ির উঠানে পড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জেরে আসলাম ফকির ও উসমান ফকিরের হুকুমে আসামিরা লাঠি, লোহার রড, চায়নিজ কুড়াল, চাপাতি ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রথমে রফিক মাতুব্বরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তার বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় শহীদ মাতুব্বর তাদের বাধা দিতে গেলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান শহীদ, যিনি শাজাহান মাতুব্বরের আত্মীয়। আসলাম ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের মানিকদহ গ্রামের বাসিন্দা হলেও লেখাপড়া ও রাজনীতি করেন পাশের সদরপুর উপজেলায়। তিনি ওই উপজেলা যুবলীগের সভাপতিও ছিলেন। মানিকদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ২০০৩ সালে মৃতু্যদন্ডের রায় হলেও পরে তিনি মানসিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করে প্রাণভিক্ষা পান এবং পরে সাধারণ ক্ষমার সুযোগে ২০১৭ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পান। ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসলাম ফকিরকে যে মৃতু্যদন্ডাদেশ দিয়েছিল, হাইকোর্টেও তা বহাল ছিল। আসলাম ২০১৩ সালের ১৯ মে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তাও খারিজ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগের মধ্যেই আসলামের প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দ্বিতীয় দফা আবেদন করা হয়। সেখানে তার 'মানসিক অসুস্থতার' কথা বলা হয়। দ্বিতীয় দফায় আসলাম ফকিরের প্রাণভিক্ষার আবেদন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি দন্ড হ্রাস করে আসলামকে ১৪ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। এর এক মাসের মাথায় বিশেষ দিবসে বন্দিদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগে আসলাম ফকিরের মুক্তির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনানুষ্ঠানিক চিঠি (ডিও লেটার) দেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার জাফরউল্যাহ। তবে সে সময় আসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ১৩ বছর ২ দিন কারাভোগের পর ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট গাজীপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পান সাবেক এই যুবলীগে নেতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে