অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কাদেরের

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গণপরিবহণে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবন থেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আবার বেশ কিছু অভিযোগও আমরা পাচ্ছি। আমি প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ করছি ওই সব এলাকায়। অর্ধেক বা তার চেয়ে কম যাত্রী নিয়েও পরিবহণ চলছে। আমি যাত্রীদেরও সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে টার্মিনাল এবং বাসযাত্রা হতে পারে সংক্রমণ বিস্তারের কেন্দ্র। আমি মালিক-শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব?্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি বিআরটিএর সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিচ্ছি।' করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ১ জুন থেকে অর্ধেক যাত্রী নেওয়াসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহণ চলা শুরু হয়েছে। গণপরিবহণের ক্ষতি পোষাতে ভাড়া ৬০% বাড়ানো হলেও এর অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার ঘটনাও ঘটছে। স্বাস্থ?্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, 'করোনা প্রতিরোধে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের পদক্ষেপ দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। সরকার সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়ার সময় এবং আগে-পরে স্বাস্থ?্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন?্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও কিছু কিছু মানুষ স্বাস্থ?্যবিধি মানতে শৈথিল?্য প্রদর্শন করছে, যা সংক্রমণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে আক্রান্তের সংখ?্যাও বাড়ছে। এ অবহেলা নিজের জন?্য শুধু নয়, পরিবার, সমাজ তথ?া অন?্যদের জন?্যও ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।' সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলে, 'তা না হলে জনস্বার্থে এবং জনস্বাস্থ?্য রক্ষায় সরকার আরও কড়াকড়ি, আরও কঠোর হতে বাধ?্য হবে।' দেশে করোনাভাইরাসের ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতিতে সরকার সংক্রমিত এলাকা এবং এর নানা দিক বিবেচনায় নিয়ে এলাকাভিত্তিক বা জোনে বিভক্ত করার বিষয়টি ভাবছে বলে জানান তিনি। 'জনগণের ঘনত্ব, সংক্রমণের মাত্রা, রোগীর সংখ?্যা, পার্শ্ববর্তী এলাকার যোগাযোগ ব?্যবস্থা, টেস্ট ফ?্যাসিলিটি, চিকিৎসা সুবিধাসহ নানা বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কাজ করছে। কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে। বিস্তারিত পরিকল্পনা পাওয়া গেলে যাচাই-বাছাই করে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।' মহামারির সময় বিএনপি সার্কাসের হাতির মতো সমালোচনার বৃত্তেই আবর্তিত হচ্ছে বলেও দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সংকটকে শেখ হাসিনার সরকার সম্ভাবনায় রূপ দিতে নিরলস কাজ করছেন। আর বিএনপি সংকটকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।' দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ৫ নির্দেশনা জীবন-জীবিকার প্রশ্নে সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন জনগণের স্বাস্থ?্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের পাঁচটি নির্দেশনা প্রতিপালনের আহ্বান জানিয়েছেন। এগুলো হচ্ছে- এক. অফিস-আদালত, দোকানপাট, ব?্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র স্বাস্থ?্যবিধি মেনে চলা ও সংক্রমণ রোধের কার্যপদ্ধতি অনুসরণ। দুই. গণপরিবহণে চলাচলের সময় স্বাস্থ?্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। তিন. জনসম্মুখে সব সময় মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ?্যবিভাগের নির্দেশনা মেনে চলা। চার. দলীয় নেতাকর্মীরা নিজেরা স্বাস্থ?্যবিধি মেনে চলবেন এবং তা প্রতিপালনে জনগণকে সচেতন করবেন। পাঁচ. স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিরা অঞ্চলভিত্তিক তদারকির মাধ?্যমে সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি স্বাস্থ?্যসেবা নিশ্চিতকরণেও ভূমিকা রাখবেন। আপৎকালীন অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অসহায়-দুস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।