তিনদিন ধরে হাতিটি পানিতে দাঁড়িয়ে মৃতু্যর অপেক্ষা করছিল

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পানিতে দাঁড়ানো হাতিটি
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কেরালায় একটি অন্তঃসত্ত্বা হাতির মৃতু্যর ঘটনায় তীব্র সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আনারসের ভেতর বিস্ফোরক ভরে হাতিটিকে খাইয়ে দেয়া হয়েছিল। এর আগেও পশুদের প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনা ঘটলেও হাতিকে বিস্ফোরক খাওয়ানোর সাম্প্রতিক এই ঘটনাটি স্তম্ভিত করেছে স্থানীয়দের। মোহন কৃষ্ণান নামে বনবিভাগের র?্যাপিড রেসপন্স টিমের একজন ফরেস্ট অফিসার ঘটনাটি নিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগী পোস্ট করার পর এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে মানুষ। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, আহত হওয়ার পরও হাতিটি কাউকে আঘাত না করে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তিনি আরও লেখেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিগুলোতে হাতিটির কষ্টের প্রতিফলন হয় না। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাতিটির বয়স আনুমানিক ১৪-১৫ বছর। আহত হওয়ার পর হাতিটি এতটাই শারীরিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিল, সে টানা তিনদিন ভেলিয়ার নদীতে দাঁড়িয়ে ছিল। তিনদিন ধরে হাতিটির মুখ এবং শুঁড় পানির নিচেই ছিল। এই সময়ের মধ্যে হাতিটিকে মেডিকেলসেবা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও হাতিটিকে পানি থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। স্থানীয় একটি খামারের পাশে হাতিটিকে ২৫ মে প্রথমবার লক্ষ্য করে বনবিভাগ। পালাক্কাড় এলাকার সাইলেন্ট ভ্যালি নাশনাল পার্কের বন্যপ্রাণী বিভাগের ওয়ার্ডেন স্যামুয়েল ওয়াচা বলেন, 'হাতিটি কোথায় আহত হয়েছিল, তা আমরা জানতে পারিনি। পানির নিচে থেকে সে পানি খাচ্ছিল, যা সম্ভবত তাকে কিছুটা আরাম দিচ্ছিল। হাতিটির চোয়ালের দুই পাশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার দাঁতও ভেঙে গেছে।' পালস্নাকাড়ের মান্নারকাড় অঞ্চলের বনবিভাগ কর্মকর্তা সুনিল কুমার জানান, হাতিটি আহত হয়েছে বুঝতে পারার পর বনবিভাগের কর্মকর্তারা চেষ্টা করেছিলেন নদী থেকে হাতিটিকে সরিয়ে এনে তার চিকিৎসা দেয়ার। কিন্তু হাতিটিকে কিছুতেই নদী থেকে সরানো যায়নি। পশু চিকিৎসকদের দিয়ে হাতিটির অপারেশন করানোর চেষ্টা করেছিল বনবিভাগ। অবশেষে ২৭ মে নদীতে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই হাতিটি মারা যায়। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, হাতিটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। স্যামুয়েল ওয়াচা জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে এবং জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। বিবিসি বাংলা