শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা উপসর্গ নিয়ে ৭২০ জনের মৃত্যু :সিজিএস

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৫ জুন ২০২০, ০০:০০

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লক্ষণ বা উপসর্গ নিয়ে ৭২০ জনের মৃতু্য হয়েছে। ২২ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সারাদেশে এ মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃতু্য হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১৯২ জনের। তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় এখন মৃতু্য কমেছে ১৩ শতাংশ।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ২৫টি গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও)। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) একটি প্রকল্প। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে বিপিও।

এর আগে ১৯ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০১০ জনের মৃতু্যর কথা জানিয়েছিল বিপিও। এরপর এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় গবেষকরা পুনরায় তথ্য যাচাই-বাছাই করেছে। নতুন প্রতিবেদনে বিপিও বলছে, যাচাই করতে গিয়ে একই মৃতু্যর তথ্য একাধিকবার পাওয়া গেছে। এমন বেশ কিছু মৃতু্যর তথ্য সংশোধন করা হয়েছে। বিপিও বলছে, ৮ মার্চ থেকে করোনা বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতি সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এতে দেখা যায়, ২২ থেকে ২৮ মার্চ এ সপ্তাহে করোনা উপসর্গ নিয়ে দু'জনের মৃতু্যর তথ্য পাওয়া যায়। এর পরের সপ্তাহে এটি দাঁড়ায় ৬৩ জনে। পরের সপ্তাহগুলোতে ১০৬ ও ১২০ জনে পৌঁছায়। তারপর আগের সপ্তাহের চেয়ে কমতে থাকে। গত ছয় সপ্তাহে এটি কমে এসেছে। ১১৪, ৯৩, ৫০, ৬৭, ৬২ ও সর্বশেষ সপ্তাহে ৫৪ জনের মৃতু্য হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, করোনা রোগীর মতো উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও তারা করোনায় সংক্রমিত নাও হতে পারেন। একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে ৮৫ শতাংশের করোনা পাওয়া যায়নি বলেও উলেস্নখ করা হয় প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে সিজিএসের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র থেকে তথ্য নিতে গিয়ে একই তথ্যের পুনরাবৃত্তি হয়েছিল, যা সংশোধন করা হয়েছে। তবে করোনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে। এছাড়া মহলস্নাভিত্তিক সচেতনতা তৈরিতে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

গবেষকেরা বলছেন, দৈনিক সংবাদপত্র জাতীয় ও আঞ্চলিক, টেলিভিশন, অনলাইন মিলে ২৫টি গণমাধ্যম থেকে প্রতিদিন তথ্য নিচ্ছেন তারা। এরপর এসব তথ্য থেকে মোটামুটি গ্রহণযোগ্যটা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে মাঠপর্যায় থেকে এসব তথ্য যাচাই করা হয় না। এমনকি মারা যাওয়ার পরে করোনা পরীক্ষার ফলাফলও এতে যুক্ত হয় না।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আরও কয়েকটি বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেছে বিপিও। তাদের প্রতিবেদন বলছে, করোনা নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে গত ৩০ মে পর্যন্ত ৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এ ছাড়া ত্রাণ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল ও করোনা বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৯ হাজার ১০৯ জনকে।

বিপিও প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে ১৬১টি নির্যাতন ও সামাজিক কলঙ্ক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শেষ সপ্তাহে এটি ৪৩ শতাংশ কমেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ১২৫টি বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ শতাংশ ত্রাণ সামগ্রী ও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তার দাবি এবং বেতন পরিশোধের দাবিতে ৫০ শতাংশ, ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিরুদ্ধে ৭ শতাংশ। করোনা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে ১১৯টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সারাদেশে। এতে ১৩ জন মারা গেছে এবং ৪৬১ জন আহত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে ৩ জুন পর্যন্ত ৫৫ হাজার ১৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৪৬ জন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101316 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1